করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গতকাল (বুধবার) থেকে শুরু হয়েছে সরকারঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধে নিয়ন্ত্রিত চলাচল। গতকাল প্রথমদিনে বেশ কড়াকড়ি থাকলেও দ্বিতীয় দিনে খানিকটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে রাস্তায়। 

বৃহস্পতিবার বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় প্রথম দিনের মতো পুলিশের কড়া তৎপরতা দেখা যায়নি।  

ব্যাংকসহ জরুরি যেসব অফিস খোলা রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা রাস্তায় নেমে অফিসে পৌঁছাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কর্মীদের অফিসে নিয়ে যেতে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে সরকারিভাবে নির্দেশনা দেওয়া হলেও বাস্তবে দেখা গেছে অফিসে পৌঁছানোর উপায় কর্মীদেরই খুঁজে বের করতে হয়েছে।   

দেখা গেছে, দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তারা কোনো পরিবহন পাচ্ছেন না। রিকশা চললেও তা পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া রিকশাওয়ালারা ভাড়াও হাঁকছেন অনেক বেশি।

রাস্তায় গাড়ির চাপ না থাকায় বেশির ভাগ সড়ক ফাঁকা থাকলেও পুলিশের চেক পোস্টের কারণে কোনো কোনো সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেসব সড়ক ব্যবহার করতে গিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি অনেকে। 

ব্যাংকসহ জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অফিসে যাওয়ার জন্য তাদের কাছে কোনো বাহন না থাকায় রিকশা বা প্রাইভেটকারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সেটাও সময় মতো পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভাড়াও চাচ্ছেন অনেক বেশি।  

রামপুরা ব্রিজে রিকশার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন ব্র‍্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. জাহিদ। তিনি বলেন, ১ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কোনো রিকশা মহাখালী যেতে চাচ্ছে না। আর একটা প্রাইভেট কার পেয়েছিলাম। কিন্তু ভাড়া চায় ৫০০ টাকা।  সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের।

রাজধানীর শাহজাদপুর এলাকা থেকে মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে যাবেন নার্স সেবিকা রানী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৯টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি, রাস্তায় কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। হাসপাতালে এখন কীভাবে যাব। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক সঙ্গে এত লোককে গাড়ি সার্ভিস দিতে পারছে না। তাই আমরাও ভোগান্তিতে পড়েছি।

এদিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে দেখা যায় বিধিনিষেধ অমান্য করছেন অনেকে। জরুরি কোনো প্রয়োজন না থাকলেও অনেককে রাস্তায় বের হতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অফিস টাইম হওয়াতে তারা এখন কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন।

মুভমেন্ট পাসের বিষয়ে জানতে চাইলে মেরুল বাড্ডায় বসানো একটি চেক পোস্টে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক মর্যাদার একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন অফিস টাইম। এমনি এমনি কেউ বের হয়নি। আমাদের যখন প্রয়োজন মনে হবে তখন আমরা মুভমেন্ট পাস চেক করব।

এমএসি/এনএফ/জেএস