আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হকের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পুলিশের তত্ত্বাবধানে রিহ্যাবে সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় মিন্টো রোডে ডিবি কম্পাউন্ডে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, আদম তমিজী হকের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিবিপ্রধান বলেন, তমিজী হকের নামে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা রয়েছে। এছাড়া রমনা থানায় একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গতকাল তাকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব অসংলগ্ন কথা বলেছেন। যে দেশে খেয়ে পরে মানুষ হয়েছেন, যে দেশে তার ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে সে দেশের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলেছেন। তিনি একবার ইসরায়েলকে আহ্বান করেছেন তাকে উদ্ধারের জন্য, একবার আমেরিকান মেরিন সেনাকে আহ্বান জানিয়েছেন।

তার কথা শুনে মনে হয়েছে তিনি মানসিকভাবে ইমব্যালেন্স। আসলেই তিনি সাইকোলোজিক্যাল ডিসঅর্ডার কি না আমরা জানি না। তার এমনিতে অনেক সমস্যা আছে, সে অনেকগুলো বিয়ে করেছেন। একবার এক বউকে ধরে আরেক বউকে ছাড়ে, এমন পারিবারিক সমস্যা রয়েছে।

তিনি যদি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে থাকেন, সে কারণে আমরা তাকে ভালো একজন সাইকোলোজিস্টের কাছে পাঠিয়েছি। সেখানে সাইকোলোজিস্ট ও মাদকাসক্তের চিকিৎসকরা রয়েছেন, তারা পরীক্ষা করছেন।

যদি তমিজী মেন্টালি ফিট হয়ে থাকেন, তাহলে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। যে তিনি বিভিন্ন কার্যক্রমগুলো কেন করেছেন বা তার পেছনে কারা রয়েছে। ইনটেনশনালি তিনি এসব করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি ডাক্তাররা তাকে সাইকলোজিক্যালি ইমব্যালেন্স বলেন তাহলে কিছু করার নাই।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে গুলশানের বাসা থেকে আদম তমিজীকে আটক করে ডিবি পুলিশের একটি টিম। পরে রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ করার অভিযোগে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আরও পড়ুন

গত ১৩ নভেম্বর রাতে দেশে ফেরেন আদম তমিজী হক। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক। এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তমিজী হক ফেসবুকে ঘোষণা দেন, গাজীপুরের একজন প্রতিমন্ত্রী তার ব্যবসা বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করছেন। তাকে তার ব্যবসার সুরক্ষার জন্য বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে বাধ্য করছেন। তারপরে তিনি ফেসবুক লাইভে তার পাসপোর্ট পুড়িয়ে দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। পরে তাকে তার দলীয় পদ থেকে দ্রুত অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ তাকে বরখাস্ত করে।

অবশ্য পরবর্তী সময়ে নিজের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলার কারণে ক্ষমা চান তমিজী হক। তিনি বলেন, অতিরিক্ত আবেগের বশবর্তী হয়ে এমন কাজ করেছেন, যা একদমই উচিত হয়নি। তিনি বাংলাদেশকে অনেক ভালোবাসেন।

এমএসি/এসএম