দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর দেনা ১৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৫ টাকা। তার স্ত্রীর নামে গুলশানে রয়েছে ফ্ল্যাট, যার দাম মাত্র ৩২ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করা তার হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ঢাকা-৩ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন টানা ১০ বছর।

হলফনামা বলছে, কৃষি খাতে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বার্ষিক আয় ১২ লাখ ৮১৬ টাকা। এ খাতে তার ওপর নির্ভরশীলদের বর্তমান বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া থেকে তার আয় ১ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার ৭৪৭ টাকা। বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর ওপর নির্ভরশীলদের বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ২২৬ টাকা। 

ব্যবসা থেকে প্রতিমন্ত্রীর বর্তমানে আয় ৪২ লাখ ৮ হাজার ৪৭৭ টাকা। বর্তমানে তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩৫ লাখ ৬ হাজার ৪২১ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত খাতে বর্তমান আয় ৫ লাখ ৯০ হাজার ৫৮৮ টাকা। প্রতিমন্ত্রীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬২ টাকা।

বর্তমানে অন্যান্য আয়ের ঘরে লেখা হয়েছে, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত পারিতোষিক ও ভাতা থেকে আয় ৩২ লাখ ৩ হাজার ৯৫৩ টাকা। কোম্পানি হইতে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পারিতোষিক আয় ৩৬ লাখ টাকা।

অস্থাবর সম্পদ: নির্বাচনের হলফনামা অনুসারে নসরুল হামিদের হাতে বর্তমানে রয়েছে নগদ টাকা দেড় লাখ ও তার স্ত্রীর কাছে বর্তমানে আছে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯৭৮ ডলার। তার স্ত্রীর রয়েছে ৫ হাজার ডলার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নসরুল হামিদের রয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার ৫১৭ টাকা। তার স্ত্রীর ব্যাংকে রয়েছে ১২ লাখ ২২ হাজার ৫৩৬ টাকা। তার স্ত্রীর নামে আলিফিয়া প্রপার্টিজ লিমিটেডের ৬৩ হাজার শেয়ারের মূল্য ৬৩ লাখ টাকা রয়েছে। 

পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা। বর্তমানে এ খাতে তার স্ত্রীর রয়েছে সেভিংস সার্টিফিকেটের মূল্য ৪৫ লাখ টাকা ও এফডিআরের মূল্য ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮৯৪ টাকা। বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেল রয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার ৯১৬ টাকার। 

উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হিসেবে স্বর্ণালংকার, মূল্যবান পাথরসামগ্রী ও হীরা রয়েছে ৩৭৩.২৫ গ্রাম। যার মূল্য অজানা। তার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার ১০২৬.০৬ গ্রাম রয়েছে। যার মূল্য ৮ লাখ ২৫ হাজার ৭৭০ টাকা। 

বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর নামে থাকা ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দাম ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৮৭৫ টাকা। স্ত্রীর নামে ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫০ টাকার। নসরুল হামিদের নামে আসবাবপত্র রয়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার ১২৫ টাকার। স্ত্রী নামে রয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ২৫ টাকার।

স্থাবর সম্পত্তি: নসরুল হামিদের কৃষিজমির পরিমাণ ৬ বিঘা, যার মূল্য ৮৯ হাজার ৯৩৫ টাকা। বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ২৯০ টাকা মূল্যের একটি বাণিজ্যিক স্পেস রয়েছে। স্ত্রীর নামে বারিধারায় ৩২ লাখ মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। 

এছাড়া রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে ৩৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি প্লট, জমির পরিমাণ ১০ কাঠা ৬ ছটাক ২ বর্গফুট। প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর নামে বর্তমানে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি প্লট রয়েছে, জমির পরিমাণ ৪ কাঠা ১৫ ছটাক ৩৮ বর্গফুট।

ঋণ: বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর ঋণ ১৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৫ টাকার। এর মধ্যে রয়েছে ছোট ভাই ইন্তেখাবুল হামিদের কাছ থেকে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা, কেরানীগঞ্জে অবস্থিত নিজস্ব জমি বিক্রয় বাবদ অগ্রিম গ্রহণ ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, ঢাকার পরীবাগে আবাসিক ফ্ল্যাট ভাড়ার নিরাপত্তা জামানত বাবদ অগ্রিম গ্রহণ ১ লাখ টাকা এবং এবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে গৃহীত ঋণ ১১ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৫ টাকা।

এমএসআই/পিএইচ