সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ২৬২টি উপজেলার ১ কোটি ১৫ লাখ প্রান্তিক মানুষ এই সুবিধা পাচ্ছেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চারটি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির মোট সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১ কোটি ১৫ লাখ। এর মধ্যে ৫৮.০১ লাখ বৃদ্ধ, ২৫.৭৫ লাখ বিধবা ও নির্যাতিত নারী এবং ২৯ লাখ শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ।

এতে বলা হয়, সরকার প্রতি বয়স্ক ব্যক্তিকে নগদ ভাতা হিসেবে মাসিক ৬০০ টাকা, বিধবা ও নির্যাতিত নারীদের জন্য ৫৫০ টাকা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীকে মাসিক ৮৫০ টাকা করে দিচ্ছে।

সরকার চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) ১.০ লাখ শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি হিসেবে ১১২.২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।

সমাজকল্যাণ সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ বলেন, ‘দেশের বিপুল গ্রামীণ প্রান্তিক মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।’

খায়রুল আলম বলেন, গ্রামীণ প্রান্তিক জনগণকে সমস্ত অর্থনৈতিক কষ্ট কাটিয়ে উন্নত জীবন পেতে সহায়তা করার জন্য সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি প্রসারিত করেছে।

সচিব বলেন, সরকার হিজড়া, বেদে, চা শ্রমিক এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সকল ছিন্নমূল মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় আনার জন্য কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘বয়স্ক, বিধবা ও নির্যাতিত নারী এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে সরকার-থেকে-ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতি অনুসরণ করে সরাসরি এমএফএস (মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস) এর মাধ্যমে ভাতা দেওয়া হয়। এসএসএন প্রোগ্রামের অধীনে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তিও বিতরণ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিন্নমূল, বৃদ্ধ, শারীরিক প্রতিবন্ধী, অসহায়, বিধবা, নির্যাতিত নারীদের জন্য ভাতা এবং বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি চালু করেছেন।

এছাড়া সরকার অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও প্রতিবন্ধী যুবকদের শিক্ষার জন্য সহায়তা দিয়ে আসছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে, ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১২,২০৯ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ছিল ১.০ লাখ।

প্রাথমিক স্তরের প্রতিটি শারীরিক প্রতিবন্ধী ছাত্র প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরের প্রতি ছাত্র ৮০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র ৯০০ টাকা এবং উচ্চ স্তরের ছাত্র ১,৩০০ টাকা প্রতি মাসে পাচ্ছেন। প্রতি মাসে মোট ১ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে। প্রতিমাসে ৬০০ টাকা ভাতা পাচ্ছেন এমন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২,৬০০-এ দাঁড়িয়েছে। ৫,০৬৬ বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ মাসে ৬০০ টাকা ভাতা পাচ্ছেন। প্রত্যেক চা শ্রমিক বছরে ৫ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন এবং চা শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজারে।

সম্প্রতি সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেছেন, সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে দেশ গড়তে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

-বাসস

এমএসএ