ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও শেখ ফজলুল হক মণির ছোট ছেলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস তার প্রয়াত বাবাকে বাংলাদেশের চে গুয়েভারা হিসেবে অভিহিত করেছেন। 

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবন প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ৮৫তম জন্মদিনে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, স্বাধীনতার পর শেখ মণি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং বাংলার বাণীকে একটি আধুনিক ও জনপ্রিয় পত্রিকায় রূপান্তরিত করেন। সেই পত্রিকায় তিনি নিজেই সম্পাদকীয়সহ প্রবন্ধ লিখতেন। সেক্ষেত্রে তিনি সরকারকেও ছাড় দেননি। তিনি বিপ্লবী চেতনার মানুষ ছিলেন। যদি তৎকালীন সমসাময়িক নেতৃবৃন্দের সাথে তুলনা করা হয়, তাহলে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় তৎকালীন সবচেয়ে মেধাবী, প্রজ্ঞাবান নেতা ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। আর যদি সারা বিশ্বের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে তুলনা করা হয়, তাহলে নির্দ্বিধায় বলা যায় যে তিনি বাংলার চে গুয়েভারা ছিলেন। 

তিনি বলেন, শেখ মণি বিপ্লবী জননেতা ছিলেন। বিপ্লবই তার চেতনা এবং রক্তে ছিল। তাই তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন... যে বিশাল বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করা হয়েছে, সেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে প্রতি-বিপ্লব হবেই। তাই তিনি লিখেছিলেন, বিপ্লবের পর প্রতি-বিপ্লব আসবেই। তিনি এ বিষয়ে রাজনৈতিক নেতাসহ সরকারের উচ্চ মহলকে সতর্ক করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, শেখ মণি ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার পরেই আগরতলা গিয়ে মুজিব বাহিনী গঠনের কার্যক্রম শুরু করেন। ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু সবাইকে যুদ্ধের নকশা ও পরিকল্পনা সবকিছু বুঝিয়ে দিলেন। ভারতে গিয়ে কোন বাসায় উঠতে হবে, কার সাথে দেখা করতে হবে, কীভাবে যুদ্ধ হবে, কীভাবে  দেশ স্বাধীন হবে, সব কিছু তিনি বুঝিয়ে দিলেন। 

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, তারপরে বাবার কাছে বঙ্গবন্ধু একটা চিরকুট দেন। সেই চিরকুটের বদৌলতে বাবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে এককভাবে সাক্ষাৎ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে ভারত সরকার মুজিব বাহিনীকে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ সবকিছুই দেয়। মেজর জেনারেল মালেকশ ছিলেন মুক্তিবাহিনী তথা পুরো যৌথবাহিনীর প্রধান। গেরিলা ফোর্স পরিচালনার জন্য ভারত সরকার আরেকজন চিফ নিয়োগ করেছিলেন। তিনি ছিলেন জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ ফজলুল হক মণি সম্পাদিত ‘বাংলাদেশে গণহত্যা’র ইংরেজি ভার্সন এবং স. ম. ইফতেখার মাহমুদ ও মাহমুদুল আলম তারেক সম্পাদিত ‘শেখ মণির কথামালা’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এছাড়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ ফজলুল হক মণি ও শামসুন্নেছা আরজু মণিসহ ১৫ আগস্টের কালরাতে নিহত শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির ও করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

এএসএস/কেএ