রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর উপহার, প্রতারণা থেকে ‘সাবধান’
রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সরকার সবার বিকাশ অথবা নগদ একাউন্টে ৫ হাজার টাকা উপহার দিচ্ছে। অথবা লকডাউন এবং রমজান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ২৫০০ টাকা করে প্রণোদনা দিচ্ছেন। এসব অনুদান পেতে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করার পরামর্শ দিচ্ছে কিছু প্রতারক চক্র।
ভুল তথ্য, মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে তারা গ্রাহককে ফাঁদে ফেলছে। তাই এমন সব প্রতারক থেকে সাবধান হওয়ায় পরামর্শ দিয়েছে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলো।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কয়েকটি গ্রুপে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনায় অনুদান দেওয়া হচ্ছে বলে পোস্ট করা হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, ‘রমজান মাস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সরকার সবার বিকাশ একাউন্টে ৫,০০০ টাকা উপহার দিচ্ছে।’ এমন প্রলোভন দেখিয়ে পোস্টে দেওয়া একটি লিংকে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে- নিচের লিংকে ঢুকে বিকাশ অথবা নগদ একাউন্ট নম্বর দিলেই সঙ্গে সঙ্গে টাকা চলে যাবে।
এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি চক্র প্রায় সময়ই এমন ভুল তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানায়। সুযোগ বুঝে অনেক সময় মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের পিন নাম্বার (গোপন নাম্বার) নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। রমজান মাস ঈদ ও বিভিন্ন উৎসবে এ ধরনের প্রতারণা বেড়ে যায়।
এসব বিষয়ে গ্রাহককে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে দেশের এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রাহক খানিকটা সচেতন হলেই এমএফএস প্ল্যাটফর্মে নিরাপদে লেনদেন করতে পারবেন। সেই সঙ্গে সকল প্রতারণাও রুখে দিতে পারেন।
তিনি বলেন- কোনো ফাঁদে পড়ে গ্রাহক যেন প্রতারিত না হোন সেই সচেতনতা বাড়াতে বিকাশ টিভি, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওর মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিকাশ থেকে যে অফারগুলো দেওয়া হয় তা সরাসরি বিকাশের ওয়েবসাইটে, অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে অথবা অ্যাপ/এসএমএস-এর মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে দেওয়া হয়। বিকাশের অফারে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা থাকে না। তাই গ্রাহকদের সব ধরনের তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন বিকাশের এ কর্মকর্তা।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটি ২৩ লাখ ছাড়িয়েছে। ডাক বিভাগের মোবাইলে আর্থিক সেবা ‘নগদ’ সহ হিসাব করলে গ্রাহক সংখ্যা ১৪ কোটি দাঁড়াবে।
এক স্থান থেকে আরেক স্থানে শুধু টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। যোগ হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। বিভিন্ন সেবার বিল, কেনাকাটা, রেমিট্যান্স আহরণ, সামাজিক সুরক্ষার ভাতা, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা সব সেবাই মিলছে মোবাইলে। এসব কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।
এসআই/এমএইচএস