মজুরি বোর্ডের সপ্তম সভার আগে খসড়া মজুরি কাঠামো পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। একইসঙ্গে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনসহ কারাবন্দি শ্রমিকদের মুক্তি ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি করেছে সংগঠনটি।

রোববার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবিত খসড়া মজুরি কাঠামো গার্মেন্ট শ্রমিকরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মালিকপক্ষের অনুকূলে নামমাত্র মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এলে অন্তত চারজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাসেল, আঞ্জুয়ারা ও জালালউদ্দিন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

গাজীপুরের শ্রমিক ইমরান কারখানার ভেতরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মজুরি বোর্ডের ঘোষণা করা মজুরি কাঠামো পুনর্বিবেচনা করা হবে- এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। খসড়া মজুরি প্রস্তাব চূড়ান্ত করার জন্য মজুরি বোর্ডের সপ্তম সভা চলছে। মজুরি বৃদ্ধির নামে আবারও কোনো প্রহসনের ঘোষণা এলে শ্রমিকরা তা মানবে না।
 
তারা বলেন, শ্রমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার পরিবর্তে আন্দোলনের নেতাদের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। খসড়া মজুরি কাঠামোতে একজন হেল্পারের সঙ্গে দক্ষ অপারেটরের মজুরি পার্থক্য ৫২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ন্যায়সংগত হতে পারে না। সমাবেশ থেকে বেসিক ৬৫ শতাংশ, বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১০ শতাংশ, আগের এক ও দুই নম্বর গ্রেড বহাল ও শিক্ষানবিশ গ্রেড বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের সমন্বয়ক তাসলিমা আখতার, সদস্য সচিব সাদেকুর রহমান শামীম, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সবুজ, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক তাসলিমা আক্তার, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ, ওএসকে গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান মানিক।

সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে কদমফুল ফোয়ারা ঘুরে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনের নেতারা।

/এমএইচএন/কেএ