প্রায় ৫৮২ কোটি টাকার সরকারি সার সরবরাহ না করে আত্মসাতের অভিযোগে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খানসহ (পোটন) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন— ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্সের মালিক ও সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান (পোটন), ওই প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহাদত হোসেন (নিপু) ও মো. নাজমুল আলম (বাদল), পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং প্রতিনিধি (খুলনা ও নওয়াপাড়া) মো. আতাউর রহমান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বিদেশ হতে ইউরিয়া সার সরবরাহের জন্য আমদানি করলেও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে চুক্তিকৃত বাফার গুদামে না দিয়ে ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকার ৭১ হাজার ৮০১ টন ৩১ কেজি সার আত্মসাৎ করেছেন। কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ৫০ দিনের মধ্যে সার গুদামে পৌঁছে দেওয়া কথা ছিল। সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে।  

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের সঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধি মেসার্স পোটন ট্রেডার্স এবং প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহ দেওয়ার জন্য মোট ১৩টি স্থানীয় পরিবহন চুক্তি সই হয়। যার মধ্যে ৩৭টি চুক্তির অধীনে আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭.৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হলেও ৭১ হাজার ৮০১ টাকা ৩১ কেজি ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, ট্রানজিটে থাকা অসরবরাহ করা ইউরিয়া সার দ্রুত সরবরাহ দেওয়ার জন্য মেসার্স পোটন ট্রেডার্সকে ধারাবাহিকভাবে পত্র এবং তাগিদ পত্রসহ মোট ৪৩টি পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিসিআইসি গঠন করা তদন্ত কমিটিতেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। আসামিদের দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরএম/এমএ