স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আপনারা বলছেন মামলা বেড়ে গেছে, আমার কাছে তথ্য আছে‍ মামলা কমেছে। ২৮ অক্টোবরের আগে সারা দেশে প্রতিদিন দুই হাজারের কাছাকাছি বিভিন্ন অভিযোগে আসামিরা জেলে যেতেন। আবার দুই হাজারের কাছাকাছি ছাড়া পেতেন। আর ২৮ অক্টোবরের পরে এ সংখ্যা কমে এসেছে। এখন গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৮১৬ জন জেলে যাচ্ছেন। এর নানাবিধ কারণ হতে পারে। আপনারা সংবাদ দিচ্ছেন আমরা যাকে পাই তাকে ধরছি, সেটি কিন্তু সঠিক নয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবরের আগে সারা দেশে প্রতিদিন ৫৬৫টি মামলা হতো। কিন্তু এখন প্রতিদিন ৪৩৮টি মামলা হচ্ছে। ১২৭টির মতো মামলা কমেছে। আমি আপনাদের ধারণাটা দিলাম, তারা যে বলছে রাজনৈতিক মামলায় যাকে পাচ্ছি, তাকে ধরছি, বিএনপির নেতাদের ধরছি, মামলা করছি- এটা কিন্তু সঠিক নয়।

চাপ দিয়ে কাউকে নির্বাচনে আনা হচ্ছে না বলেও এ সময় দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে চাপের কোনো প্রশ্নই আসে না। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে আসছেন। তারা সবসময় আমাদের নেতাদের বাড়ি বাড়িও যাচ্ছেন। তারা ইলেকশন করবেন, করতে চান। আমাদের কথা একটাই, নির্বাচন ডিক্লেয়ার হয়ে গেছে, আপনারা যেভাবে, দল ভেঙে যে নতুন দল করেছেন, সেভাবেও আসুন বা আপনারা যেভাবে আসতে পারেন, আসুন। আমাদের তরফ থেকে আপনাদের স্বাগত জানাই।

সরকারের প্রভাবে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না বলে তাদের আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন, সরকার প্রভাব বিস্তার করবে কেন? বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমাদের সরকারের কোনো প্রভাব সেখানে নেই। কেস টু কেস দেখে তারা (বিচারক) জামিন দিচ্ছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এখানে কোনো কিছুতে প্রভাবিত হয়ে বিচারকরা সিদ্ধান্ত দেননি। আমাদের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নয় এটি।

বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য মামলা দেওয়া ও দণ্ড দেওয়া হচ্ছে বলে যে অভিযোগ সে প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সিদ্ধান্ত তাদের নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। তাদের দল দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। বিএনপি নেতারাই ভাগ করে দিয়েছেন। একটা দল তৈমুর আলম খন্দকার ও শমসের মবিন চৌধুরী এবং আরেকটি বিএনপির একজন মন্ত্রী তৈরি করেছেন। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন রয়েছেন। তাদের সবাই একসময় বিএনপিতে ছিলেন, এখন ভাগ হয়ে যাচ্ছেন। এখানে কাউকে জোর করতে হয়নি। তারা মনে করছেন, তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, সেটা তাদের মনঃপুত হচ্ছে না। তারা নির্বাচনমুখী, সেজন্যই তারা নির্বাচনে আসছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এমনটা করেছেন। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জোর করা কিংবা আহ্বান জানানোর প্রশ্নই আসে না।

এসএইচআর/এসকেডি