বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য করার পেছনে দেশটিতে অবস্থানরত কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এবং কয়েকজন প্রবাসী সাংবাদিকদের দায় দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেছেন, আমাদের প্রবাসী বাঙালি তাদের (যুক্তরাষ্ট্রকে) জোর করে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্ত করার চেষ্টা করে।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ফোসা) উদ্যোগে দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজারের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ অভিযোগ করেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিয়ত কথা বলছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি অবস্থানে যাবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই যাবে না। পৃথিবীর ১৭৩টি দেশে নির্বাচন হয়। আমেরিকা অন্য কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলে না, কিন্তু বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে। এর মূল কারণটা হলো, আমাদের প্রবাসী বাঙালি তারা তাদের জোর করে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্ত করার চেষ্টা করে।

তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছে, আপনাদের লোকেরা আমাদের টেনে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে…আমরা কোনো দলের না। আমরা কোনো দলকে সমর্থন দিই না। সব দল আমাদের কাছে সমান। তারপরও বাঙালি সাংবাদিকরা জোর করে টেনে তাদের আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করায়। এটা দুঃখজনক।

মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু দেশ। তারা আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়। সেজন্য তারা সময় সময় অনেক উপদেশ দেয়। আমরা সেই উপদেশগুলো যাচাই-বাছাই করে যেটা ভালো মনে হয়, আমাদের দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য সেটা গ্রহণ করি।

সংলাপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, তাদের থেকে একটা প্রস্তাব এসেছে। আওয়ামী লীগ কখনও সংলাপে পিছ পা হয় না। আওয়ামী লীগ মনে করে সংলাপ…আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। আওয়ামী লীগ কখনও পেছনের দরজা দিয়ে সরকারে আসেনি। সব সময় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারে এসেছে।

ক্ষমতাসীন নির্বাচন চায় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। আমরা কাউকে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে দেব না। আর এ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য যদি কোনো বন্ধু রাষ্ট্র সহায়তা করে, তাকে স্বাগতম। আমেরিকা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে।

নির্বাচনে সংঘাত নিয়ে মোমেন বলেন, উপমহাদেশে নির্বাচনের সময় যথেষ্ট সংঘাতের সম্ভাবনা থাকে। আমাদের পাশের গণতান্ত্রিক দেশেও হয়। আমাদের দেশেও হয়। একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সবার আন্তরিকতা প্রয়োজন।

বিএনপির সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা ঔপনিবেশিক মানসিকতার মধ্যে আছে, তাদের পরিবর্তন হতে হবে। আশা করি, তারা নির্বাচনমুখী হবেন। আর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে একটা মডেল নির্বাচন করতে চাই। সেখানে সকলের সহযোগিতা লাগবে।

এনআই/এসকেডি