যাত্রী নেই, ঘুমিয়ে-গল্প করে সময় পার করছেন বাসের স্টাফরা
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা পঞ্চম দফার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়ছে না কোনো বাস। যাত্রীশূন্য টার্মিনাল সকাল থেকেই স্থবির। ঘুমিয়ে, ঘুরে ফিরে, গল্প করেই সময় পার করছেন অধিকাংশ বাসের স্টাফরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী টার্মিনাল ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, টার্মিনালের প্রবেশপথেই কয়েকজন বাসের স্টাফ আড্ডা দিচ্ছেন। যাত্রীর আশায় সকাল থেকে প্রস্তুত থাকলেও পর্যাপ্ত যাত্রী না হওয়ার কারণে বাস ছাড়েনি।
আরও পড়ুন
বিভিন্ন বাসের স্টাফরা বলেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। এখনই খাওয়ার এবং দৈনিক চলাফেরার টাকা নেই। বাড়িতে টাকা দিতে পারছি না। আবার সামনের সপ্তাহেও হরতাল আছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে চলাচল করা হালুয়াঘাটের শ্যামলী বাংলা নামের গাড়ির চালক ইবরাহিম বলেন, গত তিন ঘণ্টায় একটি মাত্র গাড়ি ছেড়েছে তাও খালি। হালুয়াঘাট আপডাউনে আমার সাড়ে ১০ হাজার টাকার তেল প্রয়োজন হয়। আমি এখন খালি গাড়ি নিয়ে গেলে এই তেলের টাকা কে দেবে?
আমরা দুই চোখে অন্ধকার দেখছি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যাত্রীর জন্য রেডি ছিলাম। কিন্তু গাড়ি বের করে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রী পাইনি। সেজন্য আবার গাড়ি স্ট্যান্ডে রেখেছি। আমি গতকাল সকালে হালুয়াঘাট থেকে এখানে গাড়ি নিয়ে এসেছি। অন্য সময় এতক্ষণে তিনটা ট্রিপ হয়ে যেত। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটা ট্রিপ নিয়েই যেতে পারিনি।
এদিকে শুক্রবার ও শনিবার দুদিন সরকারি ছুটি হওয়ায় বিকেল থেকে যাত্রী পাওয়া যাবে এমন আশা করছেন অনেকেই। রুহুল ইসলাম নামের আরেক চালক বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যাত্রী আসার কথা। যেহেতু কাল পরশুদিন বন্ধ। তবে এখনো বলা যাচ্ছে না কি অবস্থা হবে।
টার্মিনালের ভেতরে অন্যান্য কাউন্টার এবং যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য নির্ধারিত কক্ষেও দেখা গেছে শূন্যতা। নেই কর্মব্যস্ততা ও কোলাহল। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন কাউন্টার ও বাসের স্টাফ, চালক ও সহকারীরা।
কিশোরগঞ্জের উজান-ভাটি কাউন্টারের স্টাফ সুরুজ বলেন, যাত্রী নাই। অলস সময় কাটাচ্ছি, মঘুমিয়ে থাকা ছাড়া আর তো কোনো কাজ নাই। বিকেলে অবরোধ শেষ হলে তখন হয়তো যাত্রী বাড়বে। তবে আমরা যে কোনো সময় বাস ছাড়ার জন্য জন্য প্রস্তুত।
অপরদিকে সকাল থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে এনা পরিবহনের ৯টি বাস ছেড়েছে বলে কাউন্টার থেকে জানানো হয়। কাউন্টারের ম্যানেজার রিয়াজউদ্দিন বলেন, সরকার নির্দেশিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা মাথায় রেখেই বাস ছাড়া হচ্ছে। যাত্রীদের ভিডিও করে রাখা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে বাস ছাড়ার জন্য। এক ঘণ্টায় একটি গাড়িও পূর্ণ হচ্ছে না। আমরা ৩০ করে সিট পূর্ণ হলেই বাস ছাড়ছি।
আরএইচটি/এমএসএ