ফোনে পেট্রোল বোমাকে বলা হয় ‘কোকের বোতল’
রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে নাশকতা করার সময় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। তদন্তে জানা গেছে, আসামিরা বাসে পেট্রোল বোমা মারার আগে ফোনে ‘কোকের বোতল’ বলে সম্বোধন করত।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, বাস পোড়ানোর ঘটনায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। নাশকতাকারীরা সংঘবদ্ধ হতে বিভিন্ন সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করছে। সংঘবদ্ধ হয়ে তিন ধাপে এসব চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাসে আগুন দেওয়া নাশকতাকারীরা সাংকেতিক ভাষায় হামলার পরিকল্পনা ও স্থান নির্ধারণ করছে। আগুন দেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন ঘেঁটে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তিনটি ধাপে নাশকতার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তাদের সাংকেতিক ভাষায় পেট্রোলকে কোক অর্থাৎ পেট্রোলের বোতলকে কোকের বোতল বলা হয়। মিলিত হওয়ার বিষয়ে তারা বলছে, সন্ধ্যার সময় দাওয়াত রইল। এভাবে তারা একত্রিত হয়ে অতর্কিতভাবে বিভিন্ন গণপরিবহনে আগুন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। কখনো আবার যাত্রী-বেশে বাসে ওঠে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই ১৪ জনের প্রত্যেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারদের মোবাইল ফোন ঘেঁটে নানা তথ্য পাওয়া গেছে। তারা সাংকেতিক যেসব ভাষা ও শব্দ ব্যবহার করছে, এগুলো আমরা বুঝি। আমরা গ্রেপ্তারদের নাশকতার উৎস পর্যায়ে অর্থাৎ কারা কারা পরিকল্পনা-প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নে যারা জড়িত আমরা তাদের সনাক্ত করেছি। দ্রুতই সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, সবগুলো হয়তো সামনে আসছে না, তবে প্রতিদিনই কেউ না কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছেন। নাশকতা দমনে ডিএমপি আইনগত সক্ষমতার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই সব ব্যবস্থার মাধ্যমে খুব দ্রুত সকল নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) মিরপুর ১০ নম্বরে বিআরটিসির বাসে আগুন দেওয়ার সময় হাতেনাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের হাফিজুর রহমান (৩৫), শহীদুল ইসলাম (২০) ও শামীম (৪৫)।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, হাফিজুরের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল বের করে বাসে আগুন দেওয়া হয়। একরাতে ১২টি গাড়িতে আগুন দেওয়ার টার্গেট ছিল তাদের। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা তাদের বাসে আগুন দেওয়ার কাজে নিয়োজিত করেছে বলে স্বীকার করেছে তারা।
আটক হাজিফুর রহমানের মোটরসাইকেলের পেট্রোল দিয়ে বাসে তিনজনকে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ১ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয় এবং বাকি ৪ হাজার টাকা আগুন দেওয়ার পর দেওয়ার কথা ছিল।
এআর/এসকেডি