আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন ভবনের আশপাশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে তিনটি সড়কের উভয় পাশের যান চলাচল। একইসঙ্গে তফসিল ঘোষণা করা হবে– এ তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের আশপাশে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্বাচন ভবনে প্রবেশের জন্য শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও অভিমুখের সড়কটি ছাড়া বাকি তিন পাশের সড়কেই দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। সরকারি সংগীত কলেজের মূল ফটকের বিপরীত পাশের ও বাংলাদেশ কর্মকমিশনের সামনে সড়ক, আগারগাঁও সরকারি নিউ কলোনি স্টাফ কোয়ার্টার ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সামনের সড়ক এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাশের দুই সড়কেই যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সরকারি সংগীত কলেজের সামনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জলকামান এবং এপিসিসহ পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এছাড়া কমিশন ভবনের সামনে ও বিপরীতে দিকে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের অবস্থান রয়েছে। রিকশা, মোটরসাইকেল এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের গাড়ি ব্যতীত মানুষের উপস্থিতিও তেমন একটা নেই।

শের-ই-বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, নিরাপত্তার জন্যই যান চলাচল কিছুটা নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব।

এর আগে সকালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বুধবার বিকেলে ২৬তম কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ওই ভাষণে তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। বিটিভি ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে সিইসির ভাষণ।

এর আগে ৯ নভেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনুমতি নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

এমন একদিনে সিইসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছেন, যখন সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অবস্থানে অনড়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। পরবর্তী সংসদের জন্য ভোটগ্রহণ করতে হবে তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ গত ১ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে। আর ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতেই ভোট আয়োজনের প্রস্তুতির কথা এর আগে বিভিন্ন সময়ে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি।

আরএইচটি/এসএসএইচ