বিএনপি ও জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর চতুর্থ দফার অবরোধ শেষ হয়েছে সকালে। এসময় চলেনি দূরপাল্লার যানবাহন। রাজধানীর সড়কেও তুলনামূলক কম ছিল যানবাহনের চাপ। তবে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল আটটার পর চেনা রূপে ফেরে রাজধানী। চিরচেনা যানজটে পড়ে আধা ঘণ্টার গন্তব্যে পৌঁছতে ঘণ্টা পার।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁও, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মহাখালী, বনানী, কাকলী ও গুলশান এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মহাখালী থেকে এয়ারপোর্টমুখি সড়কে যানবাহনের চাপ তুলনামূলক কম। সিগন্যাল ছাড়া অধিকাংশ সড়কে দ্রুত গতিতে ছুটতে দেখা গেছে সব যানবাহনকে। তবে বনানী-কাকলী হয়ে মহাখালীর দিকের সড়ক যেন দুর্ভোগের অপর নাম। ৫ থেকে ১০ মিনিটের আগে ছাড়ছে না কোনো সিগন্যাল। বনানী থেকে মহাখালী পেরোতে সময় লাগছে কমপক্ষে আধঘণ্টা।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, অবরোধে চাপ কম ছিল সড়কে। আজ কোনো অবরোধ নেই। নেই কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি। সড়কে তাই অত্যধিক গাড়ির চাপ। বিশেষ করে অফিস টাইমে যানবাহনের চাপ যানজটে পরিণত হয়েছে।

উত্তরা বিমানবন্দর রেল স্টেশন থেকে দুই যাত্রী নিয়ে মোহাম্মদপুরের উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় রওনা দেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক তরিকুল আকন্দ। আধা ঘণ্টায় মহাখালী সিগন্যাল পর্যন্ত পৌঁছান তিনি। এরমধ্যে শুধু কাকলী সিগন্যাল পার হতেই ১৫ মিনিট।

সকাল ১০টায় মহাখালী সিগন্যালের আগে বিআরটিএ ভবনের সামনে অপেক্ষায় থাকা সিএনজি চালক তরিকুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১০/১২ মিনিটে উড়ে এলাম বনানী। গাড়ির চাপ শুরু কাকলী সিগন্যালের আগে থেকে শুরু। ১৫ মিনিটে কাকলী পর্যন্ত আসার পর যেন সামনে গাড়ি চলছেই না। এখান থেকে মহাখালী ২ মিনিটের পথ হলেও যেন বহুদূর। এখান থেকে মোহাম্মদপুর পৌঁছাতে ঘণ্টাখানেক সময় তো লাগবেই।

এদিকে বনানী এলাকায় যানজটের কারণে অনেকে ফুটপাতে মোটরসাইকেল তুলে দিয়েছে। এসব মোটরসাইকেলের হর্নের কারণে পথচারীরাও বিরক্ত। পথচারীদের হাঁটাচলাকে তোয়াক্কা না করে ফুটপাত দিয়েই চালাচ্ছে মোটরসাইকেল।

আফজাল নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ১০টায় অফিস। যাবো ফার্মগেট। অথচ এখানেই ১০টা পার। সড়কের অবস্থাটা দেখেন। বাইক নিয়েও সরু জায়গা পাচ্ছি না চালিয়ে যাওয়ার। সিগন্যাল বন্ধ হইলে আর ছাড়ার নাম নাই।

তবে মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটি থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী আলিফ পরিবহনের যাত্রী আলী আজম জানান, মোহাম্মদপুর থেকে শ্যামলী পার হতে বেগ পেতে হয়েছে। এরপর মহাখালী ফ্লাইওভারে উঠতেও সমস্যা হয়নি। কোনো যানজট দেখা যায়নি। তবে জাহাঙ্গীর গেটে গাড়ির চাপ ছিল। এরপর কাকলীর সিগন্যালে।

ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হোসেন বলেন, চেনা রূপে ফিরেছে সড়ক। সব কিছু স্বাভাবিক। কাছে কি দূরে সব ধরনের পরিবহন চলছে আজ। সকালটা অফিস টাইম হওয়ায় চাপটা বেশি থাকে মহাখালীতে। আজ এর বিকল্প কিছু হয়নি। থেমে নেই। কিন্তু প্রচণ্ড চাপে চলাচলে ধীর গতি। এরমধ্যে মহাখালী রেল ক্রসিং সিগন্যালে পড়লে তো বুঝতেই পারছেন কী হয়।

যোগাযোগ করা হলে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এ এস এম হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ একটু চাপ আছে। অবরোধের পর আজকে অনেক বেশি যানবাহন নেমেছে সড়কে। সকাল থেকেই আমরা সড়কে দাঁড়িয়ে কাজ করছি। তাছাড়া বাড্ডা, প্রগতি সরণিতে রাস্তা কাটা থাকারও প্রভাব আছে সড়কে।

জেইউ/এসএম