চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলরুটের সাতকানিয়া ও দোহাজারীর মাঝামাঝি কালিয়াইশ ইউনিয়ন এলাকায় রেল লাইনের স্লিপারে কয়েকটি ক্লিপ খুলে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা কোনো চুরির ঘটনা না, ব্রিজ নির্মাণ কাজের অংশ হিসেবে কয়েকপি ক্লিপ খোলা হয়েছে।
  
গত ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই লেনে এখনো বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল শুরুর কথা রয়েছে। এজন্য রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়াও নির্ধারণ করে বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করেছে।

এদিকে, ট্রেন চলাচল শুরুর আগে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একারণে সাতকানিয়া অংশে আরও চারটি ব্রিজ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। কয়েকমাস আগে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ভয়াবহ বন্যা হয়। এজন্য অপরিকল্পিত রেল লাইনকে দায়ী করেছিলেন কেউ কেউ। এসব বিষয় মাথায় রেখে সেখানে নতুন করে চারটি ছোট আকারের ব্রিজ করছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ব্রিজ নির্মাণ কাজের অংশ হিসেবে রোববার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে রেললাইনের সাতকানিয়া ও দোহাজারীর মাঝামাঝি কালিয়াইশ ইউনিয়ন এলাকায় রেল লাইনের স্লিপারে কয়েকটি ক্লিপ খুলে ফেলে কর্তৃপক্ষ। তবে স্থানীয় লোকজন ধারণা করেছিলেন, কেউ রেলের যন্ত্রাংশ চুরি করছে। একারণে তারা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সবমিলিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ওঠে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল (রোববার) রাতে আমাদের লোকজন ব্রিজ নির্মাণের জন্য ক্লিপ খুলেছেন। চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি। যথাসময়ে শেষ করার জন্য আমাদের লোকজন রাতে-দিনে কাজ করছেন। ১ ডিসেম্বরের আগে দুটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। বাকি দুটি এরপরে শেষ হবে। তবে ১ ডিসেম্বর রেল চলাচল শুরু হবে।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে চুরির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে আমাদের সঙ্গে এখনো রেলওয়ের যোগাযোগ হয়নি।

জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সমাপ্ত হতে যাচ্ছে। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

এমআর/এসএম