পোশাক শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নকেন্দ্র।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নকেন্দ্র। সমাবেশ এসব দাবি জানান বক্তারা।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন বলেন, মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী পোশাক শ্রমিকদের জন্য যে মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১৪১ এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ধারা ১৪১ অনুযায়ী, শ্রমিকের জীবনযাপন ব্যয়, জীবনযাত্রার মান, উৎপাদন খরচ, উৎপাদনশীলতা, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, কাজের ধরণ, ঝুঁকি, ব্যবসায়িক সামর্থ্য, দেশ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে দেখার বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় হলো ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি দিয়ে কোনোভাবেই শ্রমিকরা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পারবে না। এই মজুরিতে উৎপাদনশীলতা রক্ষা করা যাবে না বলে জাতীয় স্বার্থ খর্ব হবে।

শ্রমিক নেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, শুধু মালিকদের কথায় শ্রমিকদের এই নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করেছেন সরকার। এ দেশে কে শোনে কার কথা। তাই আমরা শ্রমিকরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আপনারা যদি আমাদের সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি দিতে চান, তাহলে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে, বাড়ি ভাড়া কমাতে হবে। বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও তা মানা হয় না। সেগুলো ঠিক না করে, আমাদের দাবি না মেনে সরকার সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ করেছে। এটা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়।’

সমাবেশে শ্রমিকনেত্রী জাহানারা বলেন, যেখানে কোনো শ্রমিক আইডি কার্ড ছাড়া কারখানায় প্রবেশ করতে পারে না, সেখানে রাজনৈতিক দলের লোকেরা মালিকপক্ষের সঙ্গে এক হয়ে আমাদের ওপর অত্যাচার করতে কারখানায় প্রবেশ করছে। এই অত্যাচার চালিয়ে আমাদের দমন করা যাবে না। আমাদের দাবি অন্যায় দাবি নয়। সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে নেয়, আমরা শ্রমিকরা আন্দোলন করব না।

সংগঠনটির পাঁচ দফা দাবি হলো:

ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করে বৃদ্ধি করতে হবে, সব গ্রেডে একইহারে মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে, প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধির বিধান নিশ্চিত করতে হবে, ষষ্ঠ এবং দশম গ্রেড বাতিল করে পাঁচটি গ্রেড করতে হবে এবং শিক্ষানবিশের বিধান বাতিল করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে গাজীপুরে নারী শ্রমিক নিহতের ঘটনায় এবং শ্রমিকদের আন্দোলনে পুলিশের বাধা দেওয়ায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। পাশাপাশি শ্রম ভবনে মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য একটি স্মারক লিপি জমা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন। সঞ্চালনা করেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এম এ শাহীন ও কেন্দ্রীয় নেতা জালাল হায়দারসহ অনেকে।

ওএফএ/কেএ