রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নগর পরিকল্পনাবিদ মাহফুজা আক্তার বলেছেন, নগর পরিকল্পনাবিদরা সবসময় কাজ করেন পরবর্তী প্রজন্ম এবং একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য।

বুধবার (৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের উদ্যোগে ‘বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস উপলক্ষ্যে এক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন।

নগর পরিকল্পনাবিদ মাহফুজা আক্তার বলেন, ১৯৫৬ সালে একটি বিশেষ ক্ষমতা বলে রাজউকের যাত্রা শুরু হয়। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিতে স্থানীয় প্রেক্ষাপটের কথা ভুলে যাই। আমরা এটাও জানি পৃথিবীর সবথেকে ঘনবসতিপূর্ণ শহর হওয়ার পাশাপাশি দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৩৪ ভাগ আসে ঢাকা থেকে। বিশ্বের অন্যান্য মেগাসিটির উদাহরণ অনুসরণ করতে গিয়ে আমাদের ঢাকা মহানগরী ইতিমধ্যেই নিজস্ব স্বকীয়তা অনেকাংশে হারিয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবসের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা, এক্ষেত্রে নগর পরিকল্পবিদগণ বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। সম্প্রতি রাজউক কর্তৃক প্রণীত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা নিয়ে জনসাধারণের থেকে অনেক ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, কিন্তু কেন ড্যাপে উল্লেখিত বিধি-নিষেধগুলো রাখা হয়েছে, সেগুলো ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা গেলে এ ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া জনসাধারণের থেকে কম আসত। এখন সময় এসেছে পরিকল্পনা কাদের জন্য করা হচ্ছে, এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদদের চিন্তা করা। আমরা সবসময় টেকসই উন্নয়ন এর কথা বলি, কিন্তু এই উন্নয়নের সুফল আদৌতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের শিশুরা পাচ্ছে কিনা সে বিষয়ে পরিকল্পনাবিদদের নজর দিতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আহসানুল কবীর বলেন, বিভিন্ন দেশ পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহ কীভাবে মোকাবিলা করছে এবং আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা সেসব চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করতে কতটা প্রস্তুত। এক্ষেত্রে আমাদের দেশীয় পরিকল্পনাবিদগণ যখন কোন শহরের পরিকল্পনা প্রণয়ন বা বাস্তবায়ন করবে তখন তারা যাতে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে পারে সে বিষয়ে বিআইপি থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন বলেন, রাজউক ১৯৫৯ সাল থেকে পরিকল্পনা প্রণয়ন শুরু করেছে, কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিষয়ে সবসময়ই একটা শঙ্কা থেকে যায়। এক্ষেত্রে আমরা আশা করি এবং বিশ্বাস করি, রাজউক কর্তৃক প্রণীত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা তাদের বিদ্যমান জনবল কাঠামো দিয়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে এবং রাজউকে নগর পরিকল্পনাবিদদের সম্পৃক্তা আরও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। রাজউক ইতিপূর্বে ১৯৯৫ এবং ২০১৫ সালে প্রণীত ড্যাপের শতকরা কতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে এর কোন ওয়ার্কিং রিপোর্ট যদিও এখনও রাজউক দেখায়নি, তবে বিআইপি থেকে এ রিপোর্ট পাওয়া বা এ বিষয়ে গবেষণা সামনে করা হবে।

এএসএস/এমএ