কিছুক্ষণ আগেই ঢাকা উত্তর কর্পোরেশনের সেমিনার হল থেকে আনুষ্ঠানিক স্মার্ট পার্কিংয়ের উদ্বোধন ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তারপর অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে গুলশান ২ এ স্মার্ট পার্কিংয়ে নিজের গাড়ি প্রথমে রেখে পেমেন্ট দিয়ে কার্যক্রম চালু করেন তিনি।

বুধবার (২ নভেম্বর) গুলশান ২ নম্বর গোল চত্বরের পাশে ডিএনসিসির স্মার্ট পার্কিংয়ে তার গাড়িটি রাখা হয়। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও গাড়িতে বসে ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

ডিএনসিসির স্মার্ট পার্কিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ডিএনসিসির এই স্মার্ট পার্কিং কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পরবর্তীতে এই কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হলে রাজধানীবাসী অবশ্যই অনেকটা স্বস্তি পাবেন।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, যত্রতত্র পার্কিং দূর করতে ঘণ্টাপ্রতি টাকা পরিশোধ করে অ্যাপের মাধ্যমে সড়কের পাশে পার্কিংয়ের এই ব্যবস্থা করেছে ডিএনসিসি। আর এই অ্যাপের মাধ্যমে গাড়ির মালিক বা চালক দেখতে পাবেন আশপাশে কোথায় পার্কিং স্লট ফাঁকা আছে। পরে সেখানে গিয়ে অ্যাপ ব্যবহার করে যে কেউ তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন। আর এটিই ডিএনসিসির অন স্ট্রিট পার্কিং বা স্মার্ট পার্কিং।

অ্যাপে কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে?

যেকোনো জায়গা থেকে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে গুগল প্লে স্টোর, অ্যাপেল অ্যাপ স্টোর থেকে ডিএনসিসি স্মার্ট পার্কিং অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাপটি ওপেন করে ক্রিয়েট এন অ্যাকাউন্ট বাটনে ক্লিক করে। অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট পেজে যাওয়ার পর নিজে এবং গাড়ির তথ্য দিয়ে ফরমটি পূর্ণ করতে হবে এবং সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ওটিপি ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে নিবন্ধটি সম্পন্ন হবে।

কীভাবে স্মার্ট পার্কিং সেবা ব্যবহার করা যাবে?

প্রথমে ফুটপাতে সাদা রং চিহ্নিত স্থানে গাড়িটি প্যারালাল বা ৬০ ডিগ্রিতে পার্ক করতে হবে, রাস্তায় নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে। এই পার্কিংটি অ্যাপ অথবা স্মার্ট পার্কিং কার্ড ব্যবহার করে বৈধতা নিশ্চিত করে নিতে হবে।

প্রথম পদ্ধতি- পার্কিং অ্যাপ ব্যবহার করে

অ্যাপ ব্যবহার করে পার্কিং নিশ্চিত করতে অ্যাপ-এ প্রবেশ করে এবং রাস্তাটি নির্বাচন করে 'পার্কিং' বাটনটি ক্লিক করতে হবে। তারপর যেকোনো একটি স্থান এবং ঘণ্টা অনুসারে গাড়ি রাখার 'সময়' নির্বাচন করে নিতে হবে। এরপর নির্বাচিত ঘণ্টা অনুসারে সফটওয়্যারটি পার্কিংয়ের চার্জ প্রদর্শন করবে এবং উক্ত চার্জ যেকোনো অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে দেওয়া যাবে। চার্জ দেওয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে পার্কিং সেবাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি- স্মার্ট পার্কিং কার্ড ব্যবহার করে

প্রথম অবস্থায় একটি 'স্মার্ট পার্কিং কার্ড' সংগ্রহ করতে হবে, যে স্মার্ট পার্কিং কার্ডটি রাস্তায় থাকা ওয়ার্ডেনের বা ইসলামী ব্যাংকের গুলশান, বনানী শাখা থেকে সংগ্রহ করা যাবে। প্রথমবারের মতো এই স্মার্ট পার্কিং কার্ডটিতে ব্যবহারকারীর তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করে নিতে হবে ইসলামী ব্যাংক গুলশান, বনানী শাখা থেকে। দ্রুত সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংকের শাখা থেকে নিবন্ধিত স্মার্ট পার্কিং কার্ডে কিছু টাকা রিচার্জ করে রাখতে হবে।

গাড়ি পার্কিং করার পর স্মার্ট পার্কিং কার্ডটি ওয়ার্ডেনকে দিলে এবং একজন কত ঘণ্টা পার্কিং করবে তা উল্লেখ করতে হবে, ওয়ার্ডেন তার হাতে থাকা পিওএস (পস) মেশিনের মাধ্যমে স্মার্ট পার্কিং কার্ড থেকে গাড়ির পার্কিং পেমেন্ট সংগ্রহ করে এবং একটি রসিদ দেবে।

স্মার্ট পার্কিং সেবার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য, উন্নত দেশগুলোর মতো আমাদের দেশে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য একটি আধুনিক ব্যবস্থাপনা তৈরি করা। সেই লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত রাস্তায় পাইলট আকারে শুরু করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন মতামত গ্রহণ করে সময় উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মানুন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি