বিএনপি ও জামায়াতের টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল, আমিনবাজার, গাবতলী পর্বতা এলাকায় দেখা যায়নি অবরোধ সমর্থনে কোনো পিকেটার বা মিছিল। তবে কর্মদিবসের প্রথম দিনে সড়ক যে রকম ব্যস্ত থাকার কথা তেমনটি দেখা যায়নি।

সড়কে চলছে না দূরপাল্লার গণপরিবহন। রাজধানী-সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জ রুটে কিছু বাস চলতে দেখা গেলেও কাঙ্ক্ষিত সেই যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। আবার কোনো কোনো রুটে যাত্রী থাকলেও কাঙ্ক্ষিত বাসের দেখা নেই।

রোববার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর গাবতলী ও এর আশপাশের এলাকায় দেখা গেছে এ চিত্র।

ট্রাফিক পুলিশ, পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গণপরিবহন কমের কারণ অবরোধ আতঙ্ক। অবরোধ শুরুর আগেই রাতে ৪/৫ জায়গায় বাসে আগুন দেওয়ার খবরে আতঙ্কটা বেশি ছড়িয়েছে।

তেজগাঁওয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মিজানুর রহমান। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও মহাখালী রুটের কোনো বাস পাননি তিনি।

তিনি বলেন, জানি আজকে অবরোধ চলছে কিন্তু অফিস তো বন্ধ নেই। নিজের যানবাহন নেই, গণপরিবহন চলাচলের আতঙ্ক। কিন্তু আমার মতো অনেকেরই গণপরিবহনই ভরসা। সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া অনেক বেশি, রিকশায় এতদূরের পথ যাওয়ারও সুযোগ নাই। তাই ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষা করছি।

দেড় ঘণ্টায় সরেজমিনে ডি-লিংক, ইতিহাস পরিবহন, সেলফি, বৈশাখী, রাজধানী পরিবহন, এসবি লিঙ্ক, সাভার পরিবহন, ঠিকানা পরিবহন, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়। 

সেলফি পরিবহনের চালক আসাদুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকালও অনেক যাত্রী ছিল। আজ যাত্রীর দেখা নেই। গাবতলীতে মশা মারার দশা। যাত্রীরা ছাড়া বাস চালাবো কীভাবে। সকাল থেকে টিপ মারতে পারিনি। দুই চারডা যাত্রী পাইছি। সাভার পর্যন্ত যাব। বাস পার্ক করবো। মানিকগঞ্জ পর্যন্ত যাব সে যাত্রীই নাই। 

লাব্বাইক বাসের চালক মো. রুবেল বলেন, সাইনবোর্ড থেকে আসলাম। দেখেন বাসে যাত্রী কয়টা। অন্যদিনে এই সময়তো গাবতলীতে যাত্রীর জন্য বাসে জায়গাই হতো না। অবরোধ চলতাছে। মানুষ সব আতঙ্কে। ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সাইনবোর্ড এলাকায় ঝামেলা চলতাছে। অনেক ঝুঁকি নিয়া আইসাও তো যাত্রী নাই। তাই সাভার যাব না, সাইনবোর্ডে ফিরে যাব, চালাবো না। 

কর্তব্যরত এক ট্রাফিক সদস্য বলেন, কর্মদিবস হিসেবে রোববারে বাড়তি চাপ থাকে গাবতলীতে। অবরোধের কারণে সে চাপ নেই অনেকটাই খালি। খুবই কম চলছে গণপরিবহন। ব্যক্তিগত যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়িই বেশি। 

অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর গাবতলী পর্বতা সিগন্যালে দাঁড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার একটি বাসের দেখা পান আব্বাস মিয়া। 

তিনি বলেন, ঠিকানা বাসে যাব। কিন্তু এই বাস নাকি মতিঝিল পর্যন্ত যাবে, এরপর আর যাবে না। সাইনবোর্ড এলাকায় নাকি ঝামেলা। ওখান থেকে আবারও অন্য পরিবহনে উঠতে হবে। জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষের ভোগান্তির দিন আজ।

জেইউ/এসএম