আরামবাগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী
মেট্রোরেল ঢাকাবাসীর জন্য উপহার, যত্নে ব্যবহার করবেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধন করলাম। এ মেট্রোরেল ঢাকাবাসীর জন্য উপহার। তবে মেট্রোরেল ব্যবহারে আমাদের যত্নবান হতে হবে, যাতে করে এটির ক্ষতি না হয়।
শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে রাজধানীর আরামবাগে আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঢাকার মানুষের জন্য আমরা মেট্রোরেল নিয়ে এসেছি। যারা উত্তরায় বসবাস করেন তারা মাত্র ৪০ মিনিটে প্রতিদিন উত্তরা থেকে মতিঝিল আসা যাওয়া করতে পারবেন। ইতোমধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার যাত্রী চলাচল করছেন। আমি মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত এ মেট্রোরেল বর্ধিত করেছি। সেটার কাজও চলছে।
সরকারপ্রধান বলেন, সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাতাল রেল হবে। আকাশ রেল দেখলাম, এখন পাতাল রেল আমরা করব। সেটা নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে এমআরটি লাইন ফাইভ, অর্থাৎ পাতাল রেলের কাজ উদ্বোধন করে দিয়েছি। এটাও ঢাকাবাসীর জন্য উপহার আমি দিয়ে গেলাম। এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। এটার সমীক্ষা চলছে। মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য ১২ হাজার প্রকৌশলীর চাকরির ব্যবস্থা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
সরকারপ্রধান বলেন, আজ মেট্রোরেলে চড়ে আমি এ অনুষ্ঠানে এসেছি। মেট্রোরেলটি ঢাকাবাসীর জন্য উপহার। যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই ঘাতকরা তাকে হত্যা করে। আমাদের জয় বাংলা স্লোগান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। ১৫ আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবনের একটি কালো অধ্যায়। ১৫ আগস্টের সময় যারা সরকারে ছিল তারা জনগণের জন্য কিছুই করেনি।
তিনি বলেন, আমরা দুই বোন বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলাম। ৬ বছর জিয়াউর রহমান আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। রেহানার পাসপোর্টও দেয়নি। আমি আওয়ামী লীগ ও দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, যারা আমার অবর্তমানে আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করেছিলেন। আমি এমন একটি সময় দেশে ফিরেছিলাম যখন স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশের ক্ষমতায় ছিল। প্রতিনিয়ত আমার ওপর আঘাত আসে। আমার নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করে বারবার আমাকে রক্ষা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কারণে আমি বারবার জীবন ফিরে পেয়েছি। আমিও বাবার মতো এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা এই দেশ গড়ে তুলছিলেন, সেই বাংলাদেশ আমি গড়তে চাই।
তিনি বলেন, সোনার বাংলাদেশ আমি গড়তে চাই। এ ঢাকার মানুষের জন্য আজকে আমরা নিয়ে এসেছি মেট্রোরেল। যানজটে কষ্ট পেতে হবে না, রাস্তায় আটকে থাকতে হবে না। যারা চাকরিজীবী, যারা কর্মজীবী, ছাত্র-শিক্ষক সকলে, বিশেষ করে আমার মেয়েরা, নারীরা, নিরাপদে চলাচল করতে পারবে এই মেট্রোরেলে।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে মেট্রোরেলের (এমআরটি লাইন-৬) আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২টা ৪১ মিনিটের দিকে বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির এ যানে চড়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তিনি। বিকেল ৩টা ৬ মিনিটে মতিঝিল স্টেশনে পৌঁছায় তাঁকে বহনকারী মেট্রোরেলের বিশেষ ট্রেন।
এমএসআই/এসকেডি