বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত দেশজুড়ে অবরোধের তৃতীয় দিনেও নেই যাত্রীদের উপস্থিতি। ফলে ছাড়ছে না দূরপাল্লার কোনো বাস। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে টেকনিক্যাল ও গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবারের (১ নভেম্বর) মতো আজও ফাঁকা গাবতলী এলাকা। মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল করলেও কোনো দূরপাল্লার বাসের দেখা মেলেনি। বাস টার্মিনাল থেকেও কোনো বাস ছাড়া হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবরোধ আতঙ্ক ও যাত্রীশূন্যতায় মালিকরা বাস ছাড়ছেন না।

চুয়াডাঙ্গা-মাগুরাগামী গোল্ডেন লাইন কাউন্টারের ম্যানেজার শেখ মাসুদ বলেন, যাত্রী না থাকলে বাসা ছাড়ার তো প্রশ্নই আসে না। সকালে এসে বসে আছি, মাত্র দুজন যাত্রী এসেছে। এত কম যাত্রী দিয়ে তো বাস ছাড়া যায় না।

তিনি বলেন, অবরোধের ফলে একটা আর্থিক ক্ষতি তো হচ্ছেই। তবে মালিকরা ভাবছেন, বাসের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার চাইতে না ছাড়াটাই বেশি নিরাপদ। তাই বেশিরভাগ বাস চলাচল বন্ধ আছে।

বাস বন্ধের প্রভাবে জরুরি প্রয়োজনে গন্তব্যে যেতে আগ্রহী যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। টার্মিনালে এসে বাস না পাওয়ায় অনেকে বিকল্প উপায়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়াগামী সেলফি পরিবহনকে বরাবরের মতো যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। বিকল্প হিসেবে যাত্রীদের এ বাসে চড়তে দেখা গেছে।

ঘোষিত অবরোধের তৃতীয় দিনেও গাবতলী এলাকায় বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। তবে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে আওয়ামী লীগের মঞ্চ ও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেখা গেছে। তাছাড়া সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে পুলিশকেও।

শনিবারের (২৮ অক্টোবর) মহাসমাবেশ পণ্ড এবং সেখানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল পালিত হয়েছে। এরপর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করবে বিএনপি ও এর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ।

তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

অন্যদিকে, সোমবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সারা দেশে তিন দিনের (৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

ওএফএ/এসএসএইচ