দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিন চলছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) প্রথম দিনে বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর-সংঘর্ষ-যানবাহনে আগুন দেওয়ার খবরে অনেকটাই যাত্রীশূন্য ছিল রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলো। বুধবার (১ নভেম্বর) সকালেও রাজধানীর অন্যতম বাস টার্মিনাল মহাখালীতে একইচিত্র দেখা গেছে।

সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মহাখালী বাস টার্মিনালে সরেজমিন দেখা যায়, যাত্রী সংকটে যেন অনেকটাই থমকে আছে রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ এই বাস টার্মিনালটি। হাতেগোনা যে কয়জন যাত্রী আসছেন, জরুরি কাজ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে তারা যাত্রা করতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালিকপক্ষের ইচ্ছে থাকলেও পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাস ছাড়তে পারছেন না তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার ভোর চারটা থেকে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা পরিবহনের কোনো বাস ছাড়েনি। এমনকি অবরোধের প্রথম দিন সারাদিনে একটি বাসও ঢাকা ছাড়েনি পরিবহনটির। মহাখালী থেকে অন্যান্য জেলায় কোনো বাস না চললেও দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর চলছে এনা পরিবহনের বাস। অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়েই বাস ছাড়ছে কোম্পানিটি।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গন্তব্যে যেতে কেউ কেউ এক বা দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বসে আছেন বাস ছাড়ার আশ্বাসে।  

ময়মনসিংহগামী যাত্রী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার এক আত্মীয় খুবই অসুস্থ। জরুরি প্রয়োজনেই যেতে হচ্ছে। ২০/৩০ মিনিট হলো কাউন্টারে এসেছি। কখন বাস ছাড়বে তারা বলতে পারেনি। তারা আশ্বাস দিয়েছে এক ঘণ্টার মধ্যেই বাস ছাড়বে।

তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর থেকে মহাখালী আসতে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি। আশা করছি রাস্তায়ও কোনো সমস্যা হবে না। তারপরও অবরোধের কারণে মনে তো একটা ভয় থাকেই।

কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়তে বাস টার্মিনালে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে রাকিব মিয়াকে। তিনি বলেন, ট্রেনে টিকিট পাইনি, ভাবছি বাসে চলে যেতে পারবো। কিন্তু এখানে এসে দেখি বাস চলে না। কিছু করার নেই, এখন বাসায় চলে যেতে হব।

অনন্যা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আফসারুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ডিউটি। এখন পর্যন্ত কোনো বাস আমরা ছাড়তে পারিনি। যাত্রী না হলে কীভাবে ছাড়বো? ৪/৫ জন যাত্রীও ভোর থেকে এখন পর্যন্ত আসেনি। একটা বাস ছাড়লেই ৫/৬ হাজার টাকা খরচ।

তিনি বলেন, সকাল ১০টা পর্যন্ত শুধু আমার কাউন্টারেই দেড়শ টিকিট, ৫০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। কিন্তু এখন সেগুলো হচ্ছে না। সারাদিনে শুধু এই কাউন্টারেই দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। শ্রমিকদের বসিয়ে রেখেই বেতন দিতে হচ্ছে।

টিআই/জেডএস