বিএনপিসহ বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমেরিকায় ট্রাম্পের সঙ্গে কি বাইডেন সংলাপ করে? যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন সংলাপ করবে সেদিন আমিও সংলাপ করব।

ব্রাসেলস সফর নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন নিয়ে শর্তহীন সংলাপে বসার কথা বলেছে। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান কি? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার সঙ্গে সংলাপ? বিরোধী দলের সঙ্গে। কোন বিরোধী দল? বিরোধী দলটা কে? সংসদীয় নিয়মে বিরোধী দলের একটা ব্যাখ্যা আছে। বিরোধী দল হচ্ছে, সেই দল যাদের সংসদে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি আছে। এর বাইরেরগুলো পরিগণিত হয় না।

সরকারপ্রধান বলেন, আমেরিকায়ও হয় না। ট্রাম্পকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কী বলবে? যদিও আমরা তাদের ব্যবস্থায় নাই। এটা মাথায় রাখতে হবে। এ যে মানুষগুলোরে হত্যা করা হলো, তাকে (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) একটা প্রশ্ন করা হলো না কেন-যখন একটা উপনির্বাচনে একটা ঘটনা ঘটেছে; হিরো আলমের বিচার চাইল। এখন পুলিশ হত্যা করল। এতগুলো সাংবাদিককে মারল। তারা এটার বিচার দাবি করল না কেন?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝখানে তারা (বিএনপি) কিছুটা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করছিল। আমাদের সরকার তাদের কোনো বাধাও দেয়নি। তাদের ওপর একটি শর্ত ছিল তারা যেন অগ্নিসন্ত্রাস-ভাঙচুর, এগুলো না করে। তারা যখন সুস্থ রাজনৈতিক কর্মসূচি করছিল, মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসও ধীরে ধীরে অর্জন করতে শুরু করেছিল। কিন্তু ২৮ তারিখে তাদের যেই ঘটনা, বিএনপি যেসব ঘটনা ঘটাল, বিশেষ করে মাটিতে ফেলে পুলিশকে যেভাবে কোপালো, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, এই ঘটনার পরে জনগণের ধিক্কার ছাড়া, বিএনপির আর কিছু জুটবে না।

প্রসঙ্গত, গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

সফরকালে ২৫ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫ কোটি ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা, সাড়ে ৪ কোটি ইউরোর একটি অনুদান এবং একই খাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোর অনুদান চুক্তি সই হয়।

এছাড়া সামাজিক খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ৭ কোটি ইউরোর আরও পাঁচটি অনুদান চুক্তি হয়। ২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তিনি। দুদিনের সফর শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

এনএম/এসকেডি