বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা ৩ দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে স্বাভাবিক রয়েছে রাজধানীর নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার পরিস্থিতি। অন্যান্য দিনের মতোই বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও রিকশা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। এছাড়াও সরেজমিনে আজিমপুর, নীলক্ষেত, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাটা সিগন্যাল ও এলিফ্যান্ট রোড ঘুরে দেখা যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অবরোধের সমর্থনে সকাল থেকে এসব এলাকায় কোনো কর্মসূচি পালন করতেও দেখা যায়নি কাউকে। তবে সড়কে মানুষের উপস্থিতি ও অনেক জায়গাতেই গণপরিবহনের সংখ্যা কম দেখা গেছে। 

মূলত, মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়াতে নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার দোকান বন্ধ হওয়ার কারণে মানুষের উপস্থিতি কম বলেও মনে করছেন অনেকে।

এছাড়াও সড়কে চলাচলকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবরোধ নিয়ে মানুষের মনে আতংক থাকলেও প্রয়োজনের তাগিদে বের হচ্ছেন তারা।

অফিসগামী জামান আহমেদ বলেন, অবরোধ হরতালের মতো পরিস্থিতিতেও আমাদের অফিস করতে হয়। সুতরাং ঘরে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। মানুষের মনে কিছুটা আতংকতো থাকবেই। হঠাৎ করে বাসে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। আমরা সাধারণ মানুষজন চলাফেরা করি বাসে। সেই বাসই যদি আমাদের জন্য নিরাপদ না হয় তাহলে তো সমস্যা। এরপরও চোখ কান খোলা রেখে জীবনের তাগিদে রাস্তায় বের হচ্ছি। অফিসে যাচ্ছি।

তবে জনসাধারণের উপস্থিতি এসব এলাকায় কম হওয়ার কারণে কিছুটা বিপাকে পড়তে হচ্ছে বলে জানান রিকশাচালক আসিরুল। তিনি বলেন, সকাল থেকে এসব এলাকায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম। যারা বের হচ্ছেন তারা ব্যক্তিগত যানবাহনে বা পায়ে হেঁটেই চলে যাচ্ছেন।

অপরদিকে যেকোনো ধরনের নাশকতা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সড়কে পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে।

নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল গনি সাবু ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নিউমার্কেট থানা পুলিশের একাধিক টিম এলাকায় টহল দিচ্ছে। কোনো ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চোখে পড়েনি এবং একই সঙ্গে সকাল থেকে অবরোধের সমর্থনে এই এলাকায় কোনো মিটিং মিছিলসহ অন্য কোনো কর্মসূচি হতেও দেখা যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বিধানের স্বার্থে মাঠে র‌্যাবের টহলের বিষয়টিও জানানো হয়েছে। নিউমার্কেট-নীলক্ষেত এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত র‌্যাব- ২ এর অতিরিক্ত সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম বলেন, অবরোধে রাষ্ট্রীয় এবং জনসাধারণের জানালেন নিরাপত্তা বিধানের স্বার্থে ঘোষণা অনুযায়ী র‌্যাবের পেট্রোলিং অব্যাহত রয়েছে বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা সবদিকে নজর রাখছি কোনো ধরনের নাশকতা কেউ যেন করতে না পারে সেটি খেয়াল রাখা হচ্ছে।

শনিবারের মহাসমাবেশ পণ্ড এবং সেখানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল পালিত হয়েছে। এরপর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করবে বিএনপি ও এর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ।

তবে সংবাদপত্রের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার গাড়ি ও জরুরি ঔষধ পরিবহন অবরোধ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

আরএইচটি/এমএ