সাভার ইপিজেড এলাকা থেকে সাভার পরিবহনে উঠেছিলেন নবীন হোসেন। গন্তব্য সদরঘাট। কিন্তু তাকে নামিয়ে দেওয়া হয় আমিনবাজার ব্রিজে। সেখান থেকে হেঁটে আসেন গাবতলীতে। কিন্তু কোনো যানবাহন পাচ্ছেন না, যে কয়টা যানবাহন চলছে সেখানে যাত্রীতে ঠাসা। 

গাবতলীতে কথা হলে নবীন হোসেন বলেন, আমার ব্যবসা সদরঘাটে। আমার মতো অনেকেই আজ জিম্মি।  বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা অবরোধের কারণে সড়কে গাড়ি কম চলছে। গাবতলীর সড়কে যেখানে হাঁটা যায় না, সেখানে গন্তব্যে যাওয়ার মতো গাড়িই পাচ্ছি না। অনেকে ভেঙে ভেঙে যাচ্ছেন। 

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৭টা থেকে সোয়া আটটা পর্যন্ত সরেজমিনে মিরপুর, গাবতলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় ঘুরে অবরোধ কর্মসূচির পক্ষে মাঠে দেখা যায়নি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মীকে। তবে ঠিকই অবরোধ কর্মসূচিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

সোয়া ঘণ্টার সরেজমিনে দেখা গেছে, দূরপাল্লায় চলছে হানিফ পরিবহন, সোহাগ, শ্যামলীর বাস। ঢাকায় ঢুকতে দেখা গেছে হানিফ, নাবিল পরিবহন, শ্যামলী পরিবহনের বাস।

ঢাকার অভ্যন্তরে ও আন্তঃজেলার মধ্যে চলাচল করতে দেখা গেছে, বৈশাখী পরিবহন, রাজধানী  সুপার সার্ভিস, ইতিহাস পরিবহন, ডি-লিঙ্ক, সাভার পরিবহন, বিআরটিসির বাস। 

এর বাইরে সিএনজি, পণ্য ও মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে।

গাবতলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দূরপাল্লার গাড়ি যাচ্ছে। রাতে রওনা হওয়া দূরপাল্লার বাস ঢাকায় ঢুকলেও অন্য দিনের তুলনায় খুবই কম ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে যাত্রীবাহী বাস। অনেক যাত্রীকে খোঁজ করতে দেখা যায় গন্তব্যে যাবে এমন বাসের সন্ধান করতে। 

গাবতলী পর্বতা মোড়ে কথা হয় ট্রাফিক সদস্য শওকতের সঙ্গে। তিনি বলেন, অবরোধের সমর্থনে বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর কাউকে দেখা যায়নি। পিকেটিং নেই। তবে অবরোধের প্রভাব আছে সড়কে। তুলনামূলক যানবাহন কম সড়কে।

ডিউটিরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, ক্রাইম ডিভিশনের টহল টিম বিভিন্ন স্থানে টহলে রয়েছে। আমরা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কাজ করছি। সবই স্বাভাবিক রয়েছে। তবে দূরপাল্লার বাস কম ঢুকছে ঢাকায়। 

তবে নিকট দূরত্ব থেকে ঢাকায় আসা যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। ভেঙে ভেঙে গণপরিবহন পরিবর্তন করে যেতে হচ্ছে গন্তব্যে।

মিজানুর নামে একজন বলেন, সিংড়াই থেকে হেমায়েতপুর হয়ে প্রথমে সিএনজি এরপর বাসে আসছি। এখানেই এনে নামায় দিল বাস। আর যাবে না। আমি যাব তেজগাঁও। রাস্তায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছি, সরাসরি কোনো বাস পাচ্ছি না। আজ দেখছি গণপরিবহন কম, সামান্য কিছু বলছে। হাঁটা শুরু করেছি, সামনে যদি বাস পাই উঠে পড়ব। 

অনেক যাত্রীকেই রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দিতে অপেক্ষা করতে দেখা যায় পর্বতা বাস স্টপেজে। সেখানে কথা হয় সবুজ নামে এক বায়িং হাউজের কর্মীকে। তিনি বলেন, প্রতিদিন সাভার মিরপুর যাতায়াত করি। আজ সাভার থেকে আসছে যেন যুদ্ধ করতে হলো। তিন দফা গাড়ি পরিবর্তন করতে হলো। এখন কীভাবে যাব বুঝতেছি না। সিএনজি চলছে, কিন্তু ভাড়া আজ দ্বিগুণ হাঁকাচ্ছে।

জেইউ/এমএ