ফাইল ছবি

রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত খাজা টাওয়ারে আগুনের পর সার্ভার, র‍্যাক, ক্যাবল সরিয়ে নিচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। বিকল্প উপায়ে তারা ইন্টারনেট স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। তবে হঠাৎ ইন্টারনেট প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) অভিযোগ তুলেছে, ন্যাশন ওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কে (এনটিটিএন) যুক্ত আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল কেটে ফেলেছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে এ তার কেটে ফেলা হয় বলে জানান ইন্টারনেট প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক।

তিনি বলেন, ডেসকো থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল লিংক কেটে দেওয়া হয়েছে। তারা বলছেন- ভুল করে নাকি তারা এটা কেটে ফেলেছেন। এ কারণে আবার ইন্টারনেট সংযোগের গতিতে সমস্যা শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে খাজা টাওয়ারের মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। তারা বলছেন- ভুলবশত লাইন কাটা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

তবে ডেসকো জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের পর দিন থেকে তাদের কোনো কর্মী খাজা টাওয়ারেই যায়নি। ক্যাবল কেটে যাওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

ডেসকোর গুলশান জোনের ইঞ্জিনিয়ার সুলতান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দিন আমরা খাজা টাওয়ারের বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দিই। কিন্তু তাতে কোনো ক্যাবল কাটা পড়েনি। আর আমাদের কোনো লোক আজ খাজা টাওয়ারেই যায়নি। এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এদিকে সোমবার সকালে খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইএসপিএবি সভাপতি এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভুইয়া, বাংলাদেশ আইআইজি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জুনায়েদ।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ক্ষতিগ্রস্ত সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, ক্ষয়ক্ষতি এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে করণীয় ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় আইএসপি ও আইআইজিগুলো নিজেদের ডাটা সেন্টার স্থাপনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আইনি অনুশাসন শিথিল করার প্রস্তাব করেছে। একইসঙ্গে আপদকালীন সময়ে এনটিটিএন-এর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়ার বিষয়ও তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

তারা আরও জানান, আইএসপি ও আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলো একে-অপরের সহযোগিতার মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ফলে অগ্নিকাণ্ডে সারা দেশে ৬ টেরাবাইট ব্যান্ডইউথ আউটেজ হলেও তারা সেবা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করেননি।

তবে এখনো ৩ টেরাবাইটের মতো ডাউন রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূইয়া। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে ফেসবুক, গুগল, আকামাই-এর মতো সেবাগুলো ডাউন আছে। ইন্টারনেট সব জায়গায় আপ হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৬ অক্টোবর বিকেলে খাজা টাওয়ার ভবনে আগুন লাগে। ১৫তলা ভবনের চতুর্থ তলায় গ্রামীণফোনের ডাটা সেন্টার। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। অষ্টম তলায় আইসিএক্স, নবম তলায় আর্থ টেলিকমিউনিকেশন, দশম তলায় ঢাকা কোলোর ডাটা সেন্টার ও ১১ তলায় এনআরবি টেলিকমের অফিস।

ভবনের ১০ তলায় আইএসপি প্রতিষ্ঠান রেস অনলাইন ও অরবিট টেলিকমেরও অফিস। ফলে ডাটা সেন্টার ও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবাও।

ওএফএ/এমজে