ফাইল ছবি

চলতি সরকারের শেষ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা হতে যাচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর)। যদিও চলতি মাসে কোনো একনেক সভা হয়নি। তবে মাসের শেষদিনের একনেক সভায় পরিকল্পনা কমিশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৮২টি প্রকল্প যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সামনে। এর আগে গত জাতীয় নির্বাচনের আগে একনেক সভায় সর্বোচ্চ ৩৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

একনেক কার্যপত্র অনুযায়ী, মোট প্রকল্পের মধ্যে ৪৪টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্প এবং ৬টি ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া বাকি ৩২টি পরিকল্পনামন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে অনুমোদন দিয়েছেন। যেগুলো একনেক সভায় অবহিত করবেন।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকার মেঘনা ধোনাগোদা নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে নিচ্ছেন। মন্ত্রীপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছেন আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর মীরগঞ্জ সেতু। রাষ্ট্রপতির এলাকায় বহুল আলোচিত পাবনা জেলার ইছামতি নদী পুনরুজ্জীবিতকরণ প্রকল্প অনুমোদন করে নেওয়া হচ্ছে। যমুনা নদী টেকসই ব্যবস্থাপনার নামে দুই প্রকল্প অনুমোদন পাচ্ছে। অত্যধিক ব্যয়ের চট্টগ্রাম কক্সবাজার হাইওয়ে ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পও অনুমোদন পাচ্ছে।

এছাড়া আগামী একনেকে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ছয়টি প্রকল্প তোলা হচ্ছে। যেগুলো ইতোমধ্যেই তিনবার সংশোধন করা হয়েছে এবং ৩২টি প্রকল্প সভায় অবহিত করার জন্য তোলা হচ্ছে। যেগুলো ইতোমধ্যেই পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনুমোদন দিয়েছেন।

রেকর্ড সংখ্যক প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গত প্রায় এক মাস একনেক সভা হয়নি। একনেক সভা বেশি দিন হয়নি বলেই একসঙ্গে অনেক প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন করবো। এর আগেও আমরা প্রতিটা একনেক সভায় ২০ থেকে ২৫টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি। এক মাসে চারটি একনেক সভা হয়।

চলতি অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩০৯টি চলমান প্রকল্প রয়েছে। ৮২৫টি প্রকল্প বরাদ্দহীন নতুন প্রকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। সেই তালিকা থেকেই এখন প্রকল্প পাস করা হচ্ছে।

একনেকে যেসব নতুন বড় প্রকল্প অনুমোদন পেতে যাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- নওগাঁ মাগুরা ও জয়পুরহাট জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে তিন প্রকল্প, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, লার্নিং এডুকেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রকল্প, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অফসাইড পানি সরবরাহের সুবিধাদি স্থাপন প্রকল্প, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল ৩ এর গ্যাস বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ, যশোর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা প্রকল্প, দশ জেলায় বিএসটিআইয়ের আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৫ প্রকল্প।

এছাড়া আগামী একনেকে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ১৮ প্রকল্প অনুমোদন পাচ্ছে। ভৌত অবকাঠামোর বড় প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ভাঙ্গা যশোর বেনাপোল মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর, রিজিলিয়ান্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, ইনার সার্কুলার রিং রোডের বেরিবাদ রায়ের বাজার থেকে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজ রেলপথে রূপান্তর প্রকল্প, যমুনা রিভার সাসপেনেবল ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প ইত্যাদি।

এসআর/এমজে