ঢামেকে ‘বাবা বাবা’ বলে কাঁদছিল নিহত পুলিশ কনস্টেবলের শিশুকন্যা
মেয়ে তানহাকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাত তিনটার দিকে ডিউটি করতে বাসা থেকে বের হন পুলিশ কনস্টবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ (৩৩)। পরে শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আর্তনাদ করছেন নিহত পুলিশ কনস্টবল আমিরুল ইসলামের স্ত্রী রুমা আক্তার। ঢামেকের বারান্দায় নিহতের একমাত্র শিশু কন্যাকেও ‘বাবা বাবা’ বলে কাঁদতে দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
এসময় রুমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাত ৩টার দিকে তিনি ডিউটি করতে বের হন। শনিবার সন্ধ্যার দিকে আমাকে ফোন করে জানানো হয় আমার স্বামী আর বেঁচে নেই।’
এসময় তিনি নিহতের ভাগনে সবুজের উদ্দেশে বলেন, ‘সবুজ তোমার মামাকে কী মারটাই না মারছে। যে কী না গায়ে একটা মশা বসলেও কখনো মারেনি বরং সরিয়ে দিয়েছে... তার কপালে এ কী হলো? কত মারা মারছে যে মরেই গেল।’
সবুজ তার মামী রুমা আক্তার বলেন, ‘আজকে মামাকে ডিউটি করতে দিলেন কেন? আজকে না গেলে তো এই অবস্থা হতো না।’
তখন রুমা আক্তার বলেন, ‘ডিউটি ছিল তাই গেছে। আমার কথা কী শুনবে?’
এসময় রুমা আক্তার জানান, শুক্রবার রাতে ঘুমন্ত মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে ডিউটিতে বের হন আমিরুল ইসলাম। শনিবার সকালে ফোনে একবার কথা হয়।
রুমা বলেন, ‘তখন বলেছিল, কোনো ঝামেলা নেই রাস্তায়, সবকিছু স্বাভাবিক আছে। ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরব। মেয়ের সাথেও কথা বলল। তখন যদি জানতাম এই সর্বনাশ হবে, তাহলে থাকতে দিতাম না।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় কনস্টেবল আমিরুল ইসলামকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে মরদেহটি মর্গে রাখা হয়েছে।
এমআই/কেএ