গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা বিশ্বনেতাদের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাসেলসে দুই দিনব্যাপী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে গত ১৫ বছরে দেশের যুগান্তকারী অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনে তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা তুলে ধরে আবেগঘন কণ্ঠে বক্তৃতাকালে অংশগ্রহণকারীরা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তাকে সাধুবাদ জানান।
লন্ডন ভিত্তিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, স্বাধীনতার পরবর্তী বছরগুলোতে দেশের অভ্যন্তরে সংগ্রামের ওপর আলোকপাত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের প্রতি শান্তির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার বিশ্বের সর্বোচ্চ, যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে, যেকোনো মানদণ্ডে এটি একটি অবিশ্বাস্য অর্জন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ১৫ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ৪৬৫ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। আমরা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছি। চরম দারিদ্র্য ২০০৬ সালের ২৫.১% থেকে ৫.৬%-এ নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে উন্নীত হতে চলেছে।
শেখ হাসিনার পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের আগস্টে বিদ্রোহী সেনা অফিসারদের হাতে সপরিবারে নিহত হন। তখন ইউরোপে থাকায় কেবল শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন বেঁচে যান। শেখ হাসিনা নিজেও এরপর থেকে অনেক হামলা থেকে বেঁচে গেছেন।
বিশ্ব নেতাদের শান্তির জন্য আন্তরিক অনুরোধের মধ্য দিয়ে তার আবেগঘন বক্তৃতা শেষ হয়। অংশগ্রহণকারীরা এসময় বিপুল করতালি দিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
দুই দিনের গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩ ব্রাসেলসে বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সারা বিশ্ব থেকে সরকারের সবচেয়ে সিনিয়র প্রতিনিধিদের একত্রিত করেছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন দুই দিনের ইভেন্ট (অক্টোবর ২৫-২৬) উদ্বোধন করেন। তিনি গ্লোবাল গেটওয়ে ইনিশিয়েটিভের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহের রূপরেখা তুলে ধরেন এবং সংক্ষেপে তা অর্জনের পদ্ধতির ওপর আলোকপাত করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল এবং আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন। জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে মোহাম্মদের শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশন শেষ হয়।
সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল সব পক্ষের জন্য নতুন পরিবহন অবকাঠামোর অর্থনৈতিক সুবিধা তুলে ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্য তার দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে কথা বলেন।
উদাহরণস্বরূপ ট্রান্স-আফ্রিকান হাইওয়ে ৯ নামে পরিচিত ৩৫২৩ কিলোমিটার বেইরা-লোবিটো ট্রান্স-আফ্রিকান করিডোর ছয়টি আফ্রিকান দেশের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে।
প্রেসিডেন্ট সাল স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষকরে আফ্রিকা কীভাবে স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরি করতে পারে সে সম্পর্কেও আলোকপাত করেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানোম ঘেব্রেইসাসের সাথে ফোরাম চলাকালীন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা ভবিষতে তার দেশের ইইউতে যোগদানের বিষয়ে কথা বলেন।
সবশেষে একটি পূর্ব-রেকর্ডকৃত ভিডিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং গ্রুপ অফ সেভেনের (জি৭) বর্তমান চেয়ারম্যান ফোরামকে সমর্থনের বার্তা দেন।
এমএ