কেরানীগঞ্জে ফুটবলের নবজাগরণে কাজ করছে হামিদ স্পোর্টস একাডেমি
কেরানীগঞ্জের মাটি থেকে দেশের ফুটবলের নবজাগরণে যাত্রা শুরুর প্রত্যয় নিয়ে ‘হামিদ স্পোর্টস একাডেমি’ নানামুখী কার্যক্রম শুরু করেছে। একাডেমির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হমিদ। তিনি তার ক্রীড়ামননকে কাজ লাগিয়ে কেরানীগঞ্জের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফুটবলকে ছড়িয়ে দিতে চান।
নসরুল হামিদ একজন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব। হকিতে খেলেছেন দেশের ফার্স্ট ডিভিশনে। রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেও খেলাধুলা সবসময় তার মনে বিশেষ জায়গাজুড়ে থাকে। তাই তো নিজ নির্বাচনী এলাকার তরুণদের মধ্যে খেলাধুলাকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে গড়ে তুলেছেন হামিদ স্পোর্টস একাডেমি। এই একাডেমিতে দক্ষ কোচিং স্টাফের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠছে একঝাঁক তরুণ ফুটবলার। যারা আগামী দিনে দেশের ফুটবলে নেতৃত্ব দেবে।
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে তারুণ্যের বিকাশ যেভাবে সম্ভব সেটা অন্য কোনোভাবে সম্ভব নয়। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এ প্ল্যাটফর্মটা আমাদেরই রেখে যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফুটবল খেলতেন এবং ফুটবলকে ভালোবাসতেন। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ফুটবলকে ছড়িয়ে দিতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা নতুন নতুন মাঠ তৈরি করছি। সেখানে আমাদের ট্রেনাররা ফুটবলারদের ট্রেনিং দেবে। ফুটবল বাঙালি জাতির প্রাণের খেলা। আমাদের সে ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে। আশা করি আমাদের কেরানীগঞ্জ থেকে জাতীয় দলে ভালো ভালো ফুটবলার উঠে আসবে। সেদিনের প্রত্যাশায় আমরা যাত্রা শুরু করেছি। হামিদ স্পোর্টস একাডেমি সব ধরনের খেলাধুলার পাশাপাশি ফুটবলের নানা টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। খেলার মাঠ সংকট দূর করা, খেলোয়াড়দের অনুশীলনের সুব্যবস্থাসহ তরুণ ফুটবলারদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে কেরানীগঞ্জে ১৩টি মাঠ খেলার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে অচিরেই খেলাধুলা শুরু করা যাবে। যেগুলো বেদখল ছিল।
খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে নসরুল হামিদ কিশোর ফুটবল টুর্নামেন্ট-২৩ এর আয়োজন করেছে হামিদ স্পোর্টস একাডেমি। গত ২৩ সেপ্টেম্বর জাজিরা ফুটবল মাঠে টুর্নামেন্টটির আয়োজন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হমিদ। ঢাকা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাঁচটি ইউনিয়নের মোট ১৪টি দল এবারের টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী ১৪টি দলের মোট ২৮০ জন খেলোয়াড় এ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। অংশগ্রহণকারী সব দলের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত কম বয়সের কিশোরদের পাঁচটি দলকে চ্যালেঞ্জার গ্রুপে এবং অন্য ৯টি দলকে এলিট গ্রুপে রেখে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চ্যালেঞ্জার গ্রুপের পাঁচটি দল লিগ পদ্ধতিতে খেলায় অংশ নেয় এবং লিগের খেলা শেষে সর্বাধিক পয়েন্ট অর্জনকারী দুটি দল শহীদ সংঘ ও লায়ন্স ক্লাব ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। অপরদিক এলিট গ্রুপের ৯টি দলকে ৪টি ও ৫টি করে দুই গ্রুপে বিভক্ত করে লিগ পদ্ধতিতে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। লিগ পদ্ধতির খেলা শেষে প্রতি গ্রুপের সর্বাধিক পয়েন্ট অর্জনকারী দুটি করে মোট চারটি দল নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলার আয়োজন করা হয়। এখানে দুই গ্রুপ থেকে বিজয়ী হয়ে আসা দু’দলের মধ্যে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
এমন আয়োজন প্রসঙ্গে কেরানীগঞ্জের বয়োজ্যেষ্ঠ আকবর হোসেন বলেন, একটা সময় ছিল যখন আমাদের এই কেরানীগঞ্জ খেলাধুলার জন্য অনেক বিখ্যাত ছিল। মাঝে এই খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেল। মাদকাসক্তি বেড়ে গেল। তখন নসরুল হামিদ সাহেব এসে পুনরায় আমাদের মাঠ করে দিল। যারা বিপথে গিয়েছিল তারা আবার মাঠে ফিরে এলো।
হ্যান্ডবল জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড় নিশা মণ্ডল তার আজকের অবস্থানের পেছনে হামিদ স্পোর্টস একাডেমির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমার বাসা তেঘরিয়া। নসরুল হামিদ স্যারের সহযোগিতায় আমি খেলার সুযোগ পেয়েছি। আমি বর্তমানে হ্যান্ডবল জাতীয় দলে খেলছি। আমার মতো অনেক মেয়েই আছে যারা ভাবতেই পারেনি ঘর থেকে বের হয়ে জাতীয় পর্যায়ে এমন খেলার সুযোগ পাবে। আমাদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি নসরুল হামিদ স্যার দেখেন।
ফুটবল তথা খেলাধুলায় সার্বিক উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়কে কেরানীগঞ্জকে অন্তর্ভুক্ত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে হামিদ স্পোর্টস একাডেমি।
এমএআর/এসএসএইচ