কিশোরগঞ্জের ভৈরবে যাত্রীবাহী ট্রেনে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় আহত ২২ জন মুমূর্ষু রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে স্থানীয় উপজেলা হাসপাতালে ১৬টি মরদেহ সংরক্ষিত আছে, কোনও ধরনের ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে সেগুলো হস্তান্তর করা হচ্ছে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এক জরুরি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৫ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া ২২ জন রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ জন আহত রোগী, পঙ্গু হাসপাতালে (নিটোর) ৮ জন রোগীকে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন রোগীকে রেফার করা হলে সেখান থেকে পুনরায় ৬ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, আর হাসপাতালটিতে ভর্তি আছে ৯ জন রোগী। এমনকি পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলা হাসপাতালে আরও কিছু রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

ডা. মঈনুল আহসান বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় ভৈরব উপজেলা হাসপাতালে ১৬টি মরদেহ রাখা হয়েছে, এর মধ্যে ১৩ জনের মৃতদেহ অবস্থায় এসেছে আর বাকি ৩ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১১ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, যাদেরকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিতে প্রতিটি মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতাল থেকে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রাথমিক ধাক্কাটি সামলে নিয়েছি। তারপরও পার্শ্ববর্তী সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ভৈরব হাসপাতালে ৪০ জন চিকিৎসককে নিয়ে আসা হয়েছে, এছাড়া ভৈরব হাসপাতালে আরও ২০ জন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে চিকিৎসক নার্সসহ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী আহত রোগীদের সেবায় কাজ করছে।

শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী, ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি থেকে একে একে বের করা হচ্ছে মরদেহ। এখন পর্যন্ত অন্তত ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব জংশনের কাছাকাছি গাইনাহাটি এলাকায় ঢাকাগামী এগারসিন্দুর ও ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী একটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে যোগ দেন। 

টিআই/এমজে