‘জনস্বার্থে’ হঠাৎ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান থেকে অপসারিত হওয়া ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, আজকে পদ্মা, মেঘনা, যমুনার সব ভূমিদস্যু, বালুদস্যু, দখলবাজের বিজয় হয়েছে।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ঢাকা পোস্টকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন। ‘মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের পেছনে একজন নারী মন্ত্রীর হাত রয়েছে’ এমন বক্তব্য দেওয়ার ২৪ দিন পর আজ চেয়ারম্যানকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

এ বিষয়ে ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমার তিন বছরের কন্ট্রাক্ট ছিল। ১৬ মাস কাজ করেছি। বাকিটা সরকার নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে। তারা আবার নিয়োগ দিতে পারবে, বাতিলও করতে পারে। এই নিয়ে কোনো কমেন্ট আমি করতে চাচ্ছি না।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সে বিষয়ে এখনো অনড় ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি সেই কথাগুলোতে এখনো স্থির আছি। কারণ কথাগুলো সঠিক বলেছি। এখন পর্যন্ত প্রেস কনফারেন্স করে কেউই কোনো উত্তর দিতে পারেনি।

ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি ১৬ মাস কাজ করেছি। আমি কি সততার সঙ্গে কাজ করেছি কিনা, আমার কাজে কোন ভুল ছিল কিনা, কাজে কোনো হেলাফেলা ছিল কিনা, আমার সকল মেধা আমি এখানে ঢেলে দিয়েছি কিনা, সেটা আপনারা বিচার করবেন, জনগণ বিচার করবেন।’

তিনি বলেন, ‘জনগণ যদি মনে করে আমি কোনো শিথিলতা দেখাইনি, আমি মনে করব যে আমি সাকসেসফুল। আর যদি জনগণ বলে তুমি ঠিক পথে কাজ করতে পারোনি, তাহলে আমি ব্যর্থ। আমি শুধু এটুকুই বলি আজকে পদ্মা, মেঘনা, যমুনার সব ভূমিদস্যু, বালুদস্যু এবং দখলবাজের বিজয় হয়েছে।’

বিদায় বেলায় আপনার কোনো আক্ষেপ আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। এ বিষয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নদী দখলদারদের পেছনে রাজনৈতিক শক্তি আছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে যারা বালি উত্তোলন করছেন, তাদের সঙ্গে চাঁদপুরের একজন নারী মন্ত্রীর সম্পর্ক আছে।

জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, হায়েনারা দল বেঁধে মেঘনায় হামলে পড়েছে। মেঘনা থেকে আবার বালু তোলার চেষ্টা চলছে। এখানে শত শত ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হবে। এতে নদীর ক্ষতি হবে, মাছের ক্ষতি হবে, পরিবেশের ক্ষতি হবে। এদের থেকে নদীকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। কারও নাম উল্লেখ না করে মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, চাঁদপুরের এক নারী মন্ত্রীর সঙ্গে এদের সম্পর্ক আছে।

তিনি বলেন, ইজারা দেওয়ার নামে কর্ণফুলী নদী বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা পরিষদ জড়িত। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী নদী পরিবেশের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদী। একই সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদী। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণা করে নদীর জমি খণ্ড খণ্ড করে মেরে ফেলা হচ্ছে।

এসএইচআর/এমজে