দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। কিন্তু এতেও কমেনি জনগণের উদাসীনতা। এ অবস্থায় জনস্বার্থে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা ভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এসব কথা জানান। চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্যানডেমিকের প্রথম তরঙ্গে পরিবর্তিত পৃথিবীর নবনির্মাণ প্রক্রিয়ায় আবারও প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে দ্বিতীয় তরঙ্গ।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই সজোরে দ্বিতীয় ধাক্কা। আবারও বিধ্বংসী পরিবর্তনের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা স্বপ্নগুলো। লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনধারা। প্রচণ্ড এক ঝড়ের কবলে পড়ে হাত-পা গুটিয়ে শুধুমাত্র নিয়তি ওপর নির্ভর হয়ে আমাদের চলবে না। বাঁচতে হলে লড়তে হবে। লড়াই করে জিততে হবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হতাশার কারণ নেই। কারণ এ লড়াইয়ের নেতৃত্বে আছেন সময়ের অসম সাহসী কাণ্ডারী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি শত বিপদ বাধা চ্যালেঞ্জের মুখেও হাল ছাড়েন না।’

তিনি বলেন, ‘লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপে সবচেয়ে বিপর্যস্ত হবে দেশের বহু প্রান্তিক মানুষ। আসুন সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে দলমত নির্বিশেষে বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়াই। সরকারের পাশাপাশি সকল শ্রেণি-পেশার সামর্থবানদের সাহায্যের হাত খেটে খাওয়া মানুষ ও ভাসমান জনগোষ্ঠীর দুঃখ-কষ্টের লাঘব ঘটাতে পারে।’

গত ৪ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে সারাদেশে এক সপ্তাহ (৫-১২ এপ্রিল) গণপরিবহন, শপিংমল, বিনোদনকেন্দ্রসহ সবকিছু বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এক সপ্তাহের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা জারি করে।

কিন্তু বিধিনিষেধ কার্যকরের তিনদিনের মাথায় গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে বেচাকেনা করতে হবে। আজ থেকে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয়েছে।

এইউএ/এমএইচএস/ওএফ