মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারির সফ‌রে নির্বাচন গুরুত্ব পা‌বে : মোমেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার জাতীয় নির্বাচন এবং রো‌হিঙ্গা সমস্যা নি‌য়ে আগামী সপ্তা‌হে বাংলা‌দেশ সফর কর‌বেন বলে জা‌নি‌য়ে‌ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মো‌মেন।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তা‌হিক ব্রিফিংয়ে সাংবা‌দিক‌দের এক প্রশ্নের জবা‌বে এ তথ্য জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মূলত দু‌টি ইস্যুতে আলোচনা কর‌তে বাংলা‌দে‌শে আস‌বেন। এক‌টি হ‌লো, রো‌হিঙ্গা সমস্যা এবং অন্যটি জাতীয় নির্বাচন। এছাড়া উভয়পক্ষ পারস্প‌রিক স্বার্থ সং‌শ্লিষ্ট বিষ‌য়ে আলোচনা কর‌বে।

মো‌মেন ব‌লেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলা‌দে‌শে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখ‌তে চায়। আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার বিষ‌য়ে প্রতিশ্রু‌তিবদ্ধ। কিন্তু সরকার চাইলেই বা‌য়ো‌লেন্স ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচ‌নের বিষ‌য়ে প্রতিশ্রু‌তি দি‌তে পা‌রে না। এটার জন্য সব দ‌লের দা‌য়িত্ব র‌য়ে‌ছে। সবার আন্তরিকতা থাক‌লে বা‌য়ো‌লেন্স ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব।

কূট‌নৈ‌তিক সূত্র বল‌ছে, আগামী ১৬ অ‌ক্টোবর তিন দি‌নের সফ‌রে ঢাকায় আস‌বেন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন।

এদিকে, কল‌ম্বো‌তে বুধবার ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওরা) ২৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিনের স‌ঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ড. মো‌মে‌নের।

সাক্ষা‌তে আলোচনার বিষ‌য়ে মো‌মেন ব‌লেন, তার স‌ঙ্গে খুব ভা‌লো আলাপ হ‌য়ে‌ছে। নির্বাচন, মানবাধিকার ইস্যুসহ নানা বিষ‌য়ে আলাপ হ‌য়ে‌ছে। তা‌কে, নির্বাচ‌নের প্রস্তুতির বিষ‌য়ে ব‌লে‌ছি। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচ‌নের জন্য যেসব পদ‌ক্ষেপ নি‌য়ে‌ছে, তা তু‌লে ধ‌রে‌ছি।

২০২২ সা‌লের ন‌ভেম্ব‌রে প্রথম ঢাকা সফ‌র ক‌রেন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার। সব‌শেষ, গত বছ‌রের মে মা‌সে ঢাকায় ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে যোগ দি‌তে ঢাকায় এসেছিলেন আফরিন।

আফরিন যুক্তরাষ্ট্রের নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভুটান ও মালদ্বীপের জন্য দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর (এসসিএ) পাশাপাশি নিরাপত্তা ও ট্রান্সন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের একজন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির দা‌য়িত্ব পালন কর‌ছেন।

মার্কিন উপদেষ্টার স‌ঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক মাঝপ‌থে থে‌মে যাওয়ার তথ্য ‘মিথ্যা’

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হয়। ওই বৈঠক নিয়ে গণমাধ্যমগুলো সমালোচনা করে বলছে যে ওই বৈঠক মাঝপথে থেমে যায়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবা‌দিকরা। জবা‌বে মো‌মেন ব‌লেন, যে সাংবাদিক এগুলো লিখেছেন তিনি মিথ্যা লিখেছেন। তার কি সত্য-মিথ্যা যাচাই করার কাণ্ডজ্ঞান নেই?

যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না, বলতে পারি না  

যুক্তরাষ্ট্র থে‌কে নতুন ক‌রে নি‌ষেধাজ্ঞার বিষ‌য়ে ড. মো‌মেন ব‌লেন, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না, সেটা আমি বলতে পারি না। তবে তাদের জিজ্ঞাসা করেছি, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোথাও গণতন্ত্র আনতে পেরেছ কি না। 

তি‌নি ব‌লেন, আমি জিজ্ঞেস করেছি, তোমরা কম্বোডিয়া, নাইজেরিয়া, হাঙ্গেরিসহ কিছু দেশে গণতন্ত্রের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছ। কিন্তু কোথাও কি গণতন্ত্র এসেছে? তারা সেটা বলতে পারেনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানেই যান অনেক দেশের সরকারপ্রধান তার সঙ্গে বৈঠক করতে চান। তারা আমাদের কাছে জিনিসপত্র বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে আসেন। যেমন, আমরা এখন একটু বৈচিত্র্য আনতে চাই। বোয়িং এয়ারক্রাফট থেকে এয়ার বাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর যাই কোথায়, এটা নিয়ে তাদের মধ্যে এখন গণ্ডগোল। তারা এখন হাফ দামে আমাদের বোয়িং দিতে চায়।

এ সময় চীন প্রসঙ্গ টে‌নে মো‌মেন ব‌লেন, আমরা তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছি, চীনারা অনেক টাকা পয়সা নিয়ে আসে। কোনো হুমকি ধমকি না দিয়ে তোমরাও টাকা পয়সা নিয়ে আসো।

এনআই/এসকেডি