ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী। ৭৮তম জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান এবং যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে নানা দিক তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এসময় প্রধানমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র সফরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে বিশ্ব নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে কয়েকটি বৈঠক করেছেন তিনি। এসব বৈঠকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব উচ্চ-পর্যায়ের সভায় আমি বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরি। ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলা করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করার প্রস্তাব করেছি। সবার জন্য বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য পরিচয়পত্র সংবলিত ডাটাভিত্তিক ও আন্তঃপরিচালন যোগ্য একটি স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রস্তাব করেছি।

তিনি বলেন, ন্যায্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আলোচনায় আমি এসডিআর ঋণের সীমা কোটার পরিবর্তে প্রয়োজন ও ঝুঁকির ভিত্তিতে নির্ধারণ এবং সহজ ঋণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছি। এছাড়া, ঋণ দাতাদের মধ্যে সমন্বয় ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায্য এবং কার্যকর ঋণ সহজীকরণে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছি।

তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বিষয়ক উচ্চ-পর্যায়ের সভায় আমি পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অগ্রাধিকার তুলে ধরি। সেগুলো হলো, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা খরচ কমানো; কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ডিজিটাল ও আধুনিক ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান; জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগ প্রতিরোধে সক্ষমতা বৃদ্ধি; কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রাইমারি ডেটাবেইজ হিসেবে ব্যবহার করা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থানকে যেমন আরও সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে অধিবেশন শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে পৌঁছান তিনি।

দুই দেশে মোট ১৬ দিনের সফর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

কেএ