এনআইডির তথ্য ফাঁস, নজরদারিতে মোবাইল অপারেটরগুলো
টেলিগ্রামে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ফাঁস হওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের। এ ঘটনায় মোবাইল অপারেটরসহ সব পার্টনার সার্ভিসকে নজরদারির আওতায় এনেছে ইসি। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও এনআইডির সিস্টেম ম্যানেজারকে তথ্য ফাঁসের বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এনআইডি মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর।
বিজ্ঞাপন
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মোবাইল নম্বরসহ অনেকের ডিটেইল তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, এগুলো কীভাবে সম্ভব— এমন প্রশ্নের জবাবে এনআইডি ডিজি বলেন, ‘ইন্টারনেটের যুগে সবকিছু সম্ভব। নানান জনের কাছে আমাদের নানা তথ্য আছে। সব জায়গা থেকে ডাটা নিয়ে এগুলো করতে পারে। আমাদের এখান থেকে তথ্য যায়নি। কাজেই আমরা বলতে পারব না।’
আরও পড়ুন
১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কে কী করেছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই সিস্টেম ম্যানেজারকে নিয়ে। তারা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে বলতে পারব। কতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে এমন কিছু বলা হয়নি। যাদের কাছ থেকে তথ্য গেছে বলে সন্দেহ হয়েছে সবার সার্ভিস দেওয়া বন্ধ আছে। কত প্রতিষ্ঠান সেটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তদন্তের পর বলা যাবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘ইসির কোনো দুর্বলতা নেই। কারণ ইসির এখান থেকে হ্যাক হয়নি। ইসির টেকনিক্যাল দিকটা খুব স্ট্রং। তারা সবসময় এটা মনিটর করে।’
তিনি বলেন, ‘মোবাইল কোম্পানি হয়ত মোবাইল নম্বর দিয়ে দিচ্ছে। চক্রটি পাঁচজনের কাছ থেকে পাঁচ রকম তথ্য নিচ্ছে। পৃথিবীতে এই চক্রটা আনএথিক্যাল চক্র। এটাই আমরা বের করতে চাচ্ছি। এই চক্র কারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পার্টনারদের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সেবা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারছি না। তদন্তের পরে দোষী যে হবে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব। জরিমানা করার কোনো বিধান নেই। জরিমানা করেই বা কী হবে। মোবাইল অপারেটরগুলোরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমরা সেটিই তদন্ত করে দেখছি।’
একটি মন্ত্রণালয়ে এর আগে যে তথ্য দিয়ে এনআইডি তথ্য পাওয়া গেছে এবারও তাই হচ্ছে— বিষয়টি উত্থাপন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগে তদন্ত করে দেখি। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সবাইকে সব তথ্য শেয়ার করা হয় না। পুলিশের কাছে দশ-বারোটা তথ্য আছে। ব্যাংকগুলোর কাছে নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা আছে, এই রকম।’
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশনে যখন আবেদন করেন তখন প্রাইভেসি থাকে নাকি? যখন নিকাহ নিবন্ধন করেন তখন কি প্রাইভেসি থাকে? টেকনোলজির যুগে প্রাইভেসি বলতে কিছু থাকে না। টেকনোলজির যুগে আপনার প্রাইভেসি, আপনার তথ্য সবকিছু ইয়ে হয়ে যায়।’
সর্বোচ্চ ব্যবস্থা কী আছে, সেটা নেবেন কি না— এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক লিস্টেড করার জন্য আমরা সুপারিশ করব। তিনি যেন বাংলাদেশের কোথাও কাজ না পায়। কারণ, তিনি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে চিটিং করছে। তাকে বিশ্বাস করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কেউ জড়িত নয়। আমাদের এখান থেকে লিক হয়নি। যেসব জায়গা সাসপেক্টেড তাদের সেবা বন্ধ করা হয়েছে।’
এসআর/এমজে