শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে করা বলে দাবি করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল আল মামুন।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল ১০টা ৩৭ মিনিট থেকে ১০টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত তাকে সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি টিম জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসেরর পক্ষে এমন দাবি করেন। এ সময় ড. ইউনূসকে কাছে প্রশ্ন করা হলেও তিনি বক্তব্য দেননি। 

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে একটা মামলা করেছে দুদক। যেখানে বলা হয়েছে শ্রমিকদের ৪৩৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়নি। এর ভেতরে শ্রমিকরা তাদের অগ্রিম হিসেবে ২৬ কোটি টাকা দাবি করেছেন। শ্রমিকরা বলেছেন, ২০১৭ সালে আমরা মামলা করেছি। আইনজীবী কোনো ফি নেননি, বলেছে মামলায় জিতলে আমাদের ৬ শতাংশ যারা পাবেন তাদের অংশ তারা পাবে। এই শ্রমিকদের ফি তারা এডভান্স দাবি করেছে। কারণ, হাইকোর্টের অনুমোদনে, নির্দেশে আমরা এই সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে তাদের ৪৩৭ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয়েছি। ট্রেড ইউনিয়ন বলছে আমাদের টাকাটা অ্যাডভান্স দিতে হবে, না হলে আমাদের আইনজীবী কাজ করবে না। জিজ্ঞাসাবাদে ড. ইউনূস সাহেব বললেন এটা তো দুই পক্ষের সমঝোতা। টাকা দেওয়া হয়েছে, শ্রমিকের সেটেলমেন্ট এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী, যেটা হাইকোর্ট অনুমোদন করেছে। সুতরাং জালিয়াতি হতে পারে না।

তিনি বলেন, শ্রমিকের প্রাপ্য টাকা দেওয়া হয়েছে। এটা জালিয়াতি হতে পারে না। হাইকোর্ট নির্ধারণ করেছে। আমাদের কোম্পানির পক্ষ থেকে সেটা দিয়ে দিয়েছি। এখানে জালিয়াতির কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ, ৪৩৭ কোটি টাকা হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক শ্রমিকের টাকা হয়ে গেছে। শ্রমিকদের টাকা থেকে তাদের অ্যাডভান্স দেওয়া হয়েছে, উকিলের ফি এবং মামলার খরচ তারা আগে নিয়েছে। এটা তো জালিয়াতি হয় না। জালিয়াতি হয়  তখন, যখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের স্বাক্ষর করে জাল করে কোনো ডকুমেন্টস করে। এখানে দুইপক্ষ উপস্থিত হয়ে চুক্তি করেছে। দুই পক্ষ যখন চুক্তি করে সেটা তো জাল হতে পারে না।

এখানে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, অবশ্যই ষড়যন্ত্র আছে। যিনি অপরাধ করেননি, তার বিরুদ্ধে যদি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়, কারও পক্ষ থেকে কারও উষ্কানি ও প্ররোচনা থাকতে পারে।  আমরা দুদকে আইনের সমস্ত ব্যাখ্যা দিয়েছি। উনারা বলেছেন এই সমঝোতা চুক্তিটা জাল। আমি বলেছি এটা জাল বলতে পারেন না যখন দুই পক্ষ সম্মত, আবার হাইকোর্টের অনুমোদন প্রাপ্ত। সুতরাং এটা জাল না।

এর আগে, গতকাল (বুধবার) একই অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। সংস্থাটি উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।  

যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নাজনীন সুলতানা, নূরজাহান বেগম ও এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জন আসামিকে তলব করে দুদক।

আরএম/এনএফ