দেশেই এখন জটিল সব অপারেশনসহ আন্তর্জাতিক মানের সব চিকিৎসা হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় এতসব উন্নতির পরও কিছু লোক এমন আছেন—যারা চোখের কর্নিয়াতে একটা বালু পড়লেও সিঙ্গাপুর চলে যান।

বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে পেটে ও বুকে জোড়া থেকে পৃথক হওয়া দুই শিশুকে হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, যেসব লোক কথায় কথায় মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ দেশের বাইরে চলে যান, তাদের কোনোভাবেই আটকানো সম্ভব হবে না। তবে যারা যেতে পারেন না, আর যারা আস্থার সঙ্কটে থাকেন, তাদের আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা দিতে চাই।

উপাচার্য বলেন, আমাদের দেশের সার্জনরা সব ধরণের জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং এরকম জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। স্বল্প খরচে দেশের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধাতেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব। শিশু আবু বকর ও ওমর ফারুকের অস্ত্রোপচার তার একটি অনন্য উদাহরণ। এটি অত্যন্ত জটিল একটি অপারেশন।

তিনি বলেন, জোড়া শিশু জেনেটিক, ট্রমাসহ নানা কারণে হয়ে থাকে। এই বাচ্চা দুটি স্কিন, লিভার ও বুকের হাড্ডিতে লাগানো ছিল। জটিল এ অপারেশন সম্পন্ন করার পর তারা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে।

অপারেশনের খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই অপারেশন যদি বাইরে করা হতো তাহলে ফলোআপসহ ৩০ লাখ টাকা লাগতো। অথচ আমাদের এখানে মাত্র ৩ লাখ টাকায় এ অপারেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। আমাদের এখানে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টে খরচ হয় ২ লাখ, সেটা দেশের বাইরে করতে ৩০ লাখ টাকা লাগে। আমরা ২০ লাখ টাকায় লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করেছি। সেটা পাশ্ববর্তী দেশে করতে এক কোটি টাকা খরচ হয়। অর্থাৎ দেশেই স্বল্প খরচে জটিল অপারেশন সম্ভব। রোগীদের প্রতি আহ্বান থাকবে। আপনারা বাইরে না গিয়ে দেশে চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

এ সময় সফলভাবে জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করায় অধ্যাপক ড শারফুদ্দিন আহমেদ অস্ত্রোপচার সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও নার্সদের ধন্যবাদ জানান।

টিআই/এমএসএ