‘তড়িঘড়ি করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের ঘটনা উদ্বেগের’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের নামে নতুন মোড়কে একই ধরনের নিবর্তনমূলক ধারা সম্বলিত সাইবার নিরাপত্তা আইন তড়িঘড়ি করে সংসদে পাস করার ঘটনায় হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) যেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) প্রতিরূপ না হয়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মন্ত্রীসহ সকল সংসদ সদস্যদের জোরালো ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ থেকে খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩: তুলনামূলক পর্যালোচনা ও সুপারিশ শীর্ষক একটি কার্যপত্রও প্রেরণ করেছিল টিআইবি। অথচ আমরা দেখলাম, তাড়াহুড়ো করে আইনটি পাস করা হলো জাতীয় সংসদে, যেখানে প্রতিশ্রুতি থাকলেও টিআইবিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের পরামর্শ ও সুপারিশ আমলে নেওয়া হয়নি।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘নতুন এই আইনটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই মুক্ত চিন্তা, ভিন্নমত, বাক-স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো সাংবিধানিক অধিকারসমূহকে খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করা হয়েছে, অথচ যে বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই সাইবার অবকাঠামো, ইন্টারনেট ও সংশ্লিষ্ট সকল ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত অনেক বিষয়কেই উপেক্ষা করা হয়েছে।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর মাত্র আট দিনের মধ্যে তা কণ্ঠ ভোটে পাস করা হলো। এর ফলে জনসাধারণের প্রত্যাশাকে একদিকে যেমন পদদলিত করা হলো অন্যদিকে পাশাপাশি মুক্ত চিন্তা, মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো মৌলিক মানবাধিকার চর্চাকে অনেক ক্ষেত্রেই আবারও অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করা হলো, যা চরম হতাশাজনক।’
তিনি বলেন, ‘সাইবার স্পেসে নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করে ভিন্নমত দমন ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের জন্যই সিএসএ-এর মোড়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত কালো আইন ডিএসএ-কেই বাস্তবে বহাল রাখা হলো। ডিএসএ-এর ব্যবহার ও অপব্যবহার যেভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে জনমনে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছিল, সিএসএ-ও একইভাবে সাইবার মাধ্যম ব্যবহারকারীর জন্য হয়রানি, হুমকি, আতঙ্ক ও সাইবার নিরাপত্তাহীনতাবোধ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে প্রণীত হলো এমন উদ্বেগ মোটেই অমূলক নয়।’
আরএম/এসকেডি