শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে না ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভাগীয় তদন্ত ও ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখতে চায় সংগঠনটি।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

তিনি বলেন, যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে তাতে বাংলাদেশের সব শ্রেণির নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে যেন আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হয় সেজন্য আমরা গতকাল (রোববার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। পরে আজ (সোমবার) ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি।

আরও পড়ুন>>এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ

তিনি আরও বলেন, ডিএমপি কমিশনরারের সঙ্গে দেখা করে আমরা আমাদের দাবিগুলো তাকে জানিয়েছি। ডিএমপি কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যুগে যুগে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ যে দায়িত্বশীলতা ও সু-বিবেচনার পরিচয় দিয়েছে, এর উপর ভিত্তি করে বলতে পারি ছাত্রলীগ এ বিষয়ে একটি নিয়মতান্ত্রিক সুস্পষ্ট সমাধান পাবে।

ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা মামলা দায়ের করবেন কিন্তু ছাত্রলীগ নিষেধ করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, আমরা এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। ডিএমপির তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যেন দ্রুত দেওয়া হয় সেজন্য আমরা বলেছি। তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি যেন নিশ্চিত করা হয় সেটিই আমরা বলেছি। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পরিবারকে মামলা দায়ের করতে দেওয়া হচ্ছে না দাবিটি মিথ্যা।

আরও পড়ুন>>অন্যায়ের শাস্তি পাবেন এডিসি হারুন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পুলিশের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে? জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ডিএমপি কমিশনার আমাদের বলেছেন যে তারা এ বিষয়ে অবগত রয়েছেন। তারা এ বিষয়ে বিব্রতবোধ করছেন। এছাড়া আমরা ডিএমপিকে বলেছি এ ঘটনায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে যা যা করণীয় তারা যেন তাই করে।

এ ঘটনায় ছাত্রদলের উদ্বেগের বিষয়টিকে ছাত্রলীগ কীভাবে দেখছে? জানতে চাইলে এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, যারা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। যারা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটতে চায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায়, তাদের ফাঁদে ছাত্রলীগ পা দেবে না।

বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে কোনো ধরনের তিক্ত সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না? প্রশ্ন করা হলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সেটির কোনো সুযোগ নেই। আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইমকে নির্যাতন করেন এডিসি হারুন অর রশিদ। এ ঘটনার জেরে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এডিসি হারুনকে এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডিএমপি।

এমএসি/কেএ