সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিদের আপত্তি সত্ত্বেও ৪২ ধারা বহাল রেখেই জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩’ পাসের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। তবে বিলের ৩২ ধারায় উল্লেখ অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের বিধান বাতিলসহ কয়েকটি ধারায় সংশোধন ও কিছু ক্ষেত্রে ভাষাগত পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিলটি চূড়ান্ত করে সংসদে প্রতিবেদন উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে সংশোধিত খসড়া মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালে পাস করার পর বহুল আলোচিত-সমালোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন চালুর লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়। এরপর বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।

সংসদীয় কমিটির সভাপতির অনুপস্থিতিতে কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, আহমেদ ফিরোজ কবির, মো. নুরুল আমিন, মনিরা সুলতানা ও জাকিয়া পারভীন খানম বৈঠকে অংশ নেন।

বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে একাংশের মহাসচিব দীপ আজাদ, বিএফইউজে আরেকাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিলে অনেক পরিবর্তন করেছি। বিলের ২১ ধারার নিয়ে বিএফইউজে পরামর্শ দিয়েছে। আমরা তা গ্রহণ করেছি। ৩২ ধারার অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল করে দিয়েছি। মিথ্যা মামলার বিষয়ে যে পরামর্শ এসেছে, তা-ও আমরা গ্রহণ করেছি। সংসদে বিলের প্রতিবেদন দ্রুত জমা দেওয়া হবে।

প্রস্তাবিত আইনের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। সাংবাদিকদের কয়েকটি সংগঠন এই ধারা বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। তা পুরোপুরি গ্রহণ করা হয়নি। তবে এই ধারায় আগে তল্লাশি ও গ্রেপ্তার ক্ষমতা এসআই পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাকে দেওয়া হলেও এখন এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন ন্যূনতম পরিদর্শক পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। যেসব বিষয়ে সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের উদ্বেগ আছে, সেগুলো আমরা কমিটিকে জানিয়েছি। তারা সেগুলো সংশোধন করবেন বলে জানিয়েছেন।

ওএফএ/এসকেডি