করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সারা দেশে আজ সকাল ৬টা থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। 

চলাফেরায় এ বিধিনিষেধের প্রথম দিন (সোমবার) সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান এলাকা ঘুরে দেখা যায় এসব এলাকার দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, কাঁচা বাজার খোলা।  মানুষের উপস্থিতিও অন্যান্য দিনের মতোই। 

সেই সাথে অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে সড়কে বাড়ছে চাকরিজীবী মানুষের সংখ্যাও। শুধু চলছে না গণপরিবহন। তাই যথাসময়ে অফিসে ও গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে রিকশা, সিএনজি ও অফিস থেকে সরবরাহকৃত নিজস্ব পরিবহনের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে তাদের। 

প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও সড়কে প্রচুর। তবে চাকরিজীবীরা বলছেন, গণপরিবহন বন্ধ রেখে অফিস খোলা রাখায় দুর্ভোগ বেড়েছে তাদের।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হেলথকেয়ারে কর্মরত সাগর রহমান গাউস নাম একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে আবার অফিস খোলা। এ ধরনের সিদ্ধান্তে আমাদের মতো কর্মজীবী মানুষদের জন্য চরম পর্যায়ের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এখন একমাত্র উপায় সিএনজি ভাড়া করে অফিসে যেতে হবে। প্রতিদিন যদি এভাবে সিএনজি ভাড়া করে অফিসে যেতে হয় এবং আসতে হয় তাহলে বেশিরভাগ টাকাই সিএনজি ভাড়ায় চলে যাবে। পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে চলব? 

আবার সিএনজি অপ্রতুল থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে অধিকাংশ মানুষকেই নির্ভর করতে হচ্ছে রিকশার ওপর। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাফিজুর রহমান অনেক দরদাম করে সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ১৩০  টাকায় রিকশা ভাড়া করলেন। বললেন, চাকরি বাঁচাতে অফিসে পৌঁছোতেই হবে। সিএনজি ভাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি চাইছে। তাই বাধ্য হয়েই রিকশা ঠিক করলাম।

তবে এতকিছুর পরও বাজার, দোকান এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। কলাবাগান কাঁচা বাজারের অধিকাংশ বিক্রেতাকেই মাস্ক পরিধান করতে দেখা যায়নি। যারা মাস্ক পরেছেন তাদের অনেকে আবার নাকের নিচে অথবা থুতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে রেখেছেন।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সতর্কতা অবলম্বন না করলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই পরিস্থিতিতে সবার সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যদিও লকডাউনে মানুষের কষ্ট বাড়ে কিন্তু করোনার সংক্রমণ ও প্রাণহানি ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। মানুষ যত বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করবে তত দ্রুতই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

আরএইচটি/এনএফ