গত কয়েকদিন ধরে দেশে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। আর এই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সাত দিন কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় থাকবে দেশ।

বিধিনিষেধের খবরে লাফিয়ে বাড়ছে, স্বাস্থ্যসুরক্ষাসামগ্রীর দাম। বিশেষ করে মাস্কের দাম বাড়ল কয়েক গুণ। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সার্জিক্যাল মাস্কের দাম প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।  

সুরুজ আলী নামের মোহাম্মদপুরের একজন মাস্ক বিক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল থেকে মাস্কের দাম অনেক বেশি। লকডাউন (সরকারের বিধিনিষেধ) দেওয়া হচ্ছে, এ ঘোষণার পরই মাস্কের দাম বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা পাইকারিতে এক হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক আগে এক হাজার আটশ টাকা দিয়ে কিনতাম। কিন্তু গতকাল সেই মাস্কের দাম এক লাফে পাঁচ হাজার টাকা হয়ে গেছে। 

তিনি আরও বলেন, আগে যখন লকডাউন ছিল তখন মাস্কের দাম অনেক বেশি ছিল। কিন্তু এরপর দাম অনেক কমে যায়। গতকাল সকাল পর্যন্ত আমরা সার্জিক্যাল মাস্ক দুই টাকা করেই বিক্রি করেছি। এখন সেই মাস্ক আবার পাঁচ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। যেভাবে পাইকারিতে দাম বাড়ছে, খুচরা পর্যায়ে সার্জিক্যাল মাস্কের দাম আরও বেড়ে যাবে।

ধানমন্ডিতে রাস্তায় হেঁটে-হেঁটে মাস্ক বিক্রি করেন রবিউল নামের এক যুবক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, লকডাউন হয়ে যাচ্ছে, এজন্য সার্জিক্যাল মাস্কের দাম আবারও বেড়ে গেছে। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে। 

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ কম কিনলে দাম কম থাকে, আর বেশি কিনলে দামও বেড়ে যায়। করোনার শুরুতে মানুষ অনেক মাস্ক কিনেছিল। সেজন্য দামও বেশি ছিল। মাঝখানে মাস্ক তেমন বিক্রি হয়নি, তখন দামও কমে যায়। এখন আবার বেশি বিক্রি হচ্ছে, সেজন্য দামও বেড়ে যাচ্ছে। 

শিমুল নামের একজন ক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউন হচ্ছে, সেজন্য কিছু মাস্ক কিনে রেখেছি। যদিও দাম আগের চেয়ে বেশি। 

শনিবার (৩ এপ্রিল) করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি রোধে সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর আজ (রোববার) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। 

রোববার (৪ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও সাত হাজার ৮৭ জন। এতে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ছয় লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জনে। একই সময়ে করোনায় মারা যান আরও ৫৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ হাজার ২৬৬ জনে। 

এসএইচআর/আরএইচ