প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে অংশীজনদের মতামত শুনবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সচিবালয়ের আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

আনিসুল হক বলেন, এ বিলটা সংসদে যাবে। সংসদ আগামী সেপ্টেম্বর মাসের তিন তারিখে ডাকা হয়েছে। এটি যাতে এবার সংসদে যেতে পারে তার জন্যই এটা মন্ত্রিপরিষদ থেকে গতকালকে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। আলাপ-আলোচনার কথা যেটা, সেটা স্ট্যান্ডিং কমিটিতে (সংসদীয় কমিটি) অবশ্যই অংশীজনদের ডেকে আলাপ-আলোচনা করা হবে।

আনিসুল হক / ফাইল ছবি

আইনমন্ত্রী বলেন, আইসিটি বিভাগ যে ১০ দিন সময় দিয়েছিল, সেই ১০ দিন সময়ের মধ্যে যেসব অবজেকশনগুলো আছে, সেসব বক্তব্যগুলো একসঙ্গে জড়ো করে আমরা সবকিছুই স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে উপস্থাপন করব। যারা এখানে তাদের বক্তব্য জানাতে চাচ্ছেন, তাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সামনে গতবারের মতো বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ আমরা করে দেব।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, গতকাল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইনটি মন্ত্রিপরিষদে চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। আগের মামলাগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুসারেই চলবে- সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে এ কথাটা উল্লেখ আছে। এখন এটা কেন উল্লেখ আছে? ব্যাপারটা হচ্ছে আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে- প্রথম কথা হচ্ছে অপরাধ করার সময় যে আইন বলবৎ ছিল, সে আইনেই বিচারকার্য হবে এবং সেই আইনে যে সাজা ছিল, সেই সাজাই দিতে হবে।

তিনি বলেন, ৩৫ অনুচ্ছেদে একটা কথা আছে সেটা হচ্ছে- যদি নতুন আইন যেটা করা হচ্ছে ওইটার পরিবর্তে সেখানে যদি সাজা অধিক হয়, তাহলে সে সাজাটা দেওয়া যাবে না। পুরনো আইনে অর্থাৎ যে আইনে সে অপরাধ করেছেন অথবা যে আইন বলবৎ ছিল অপরাধ করার সময়, সেই আইনে যে সাজা আছে, তাকে সেই সাজাই দিতে হবে। দ্বিতীয়টা হচ্ছে- কোনো ভিন্নতর সাজা দেওয়া যাবে না। এখানে আমরা অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমরা যদি ২১ ধারা ধরি। এ ধারায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০ বছরের সাজা। এখানে আজকে নতুন আইনে অর্থাৎ সাইবার নিরাপত্তা আইনে বলা হচ্ছে পাঁচ বছর। তাহলে যখন এ আইন পাশ হওয়ার আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বলবৎ থাকার সময় যে অপরাধ হয়েছে, তাহলে তিনি সংবিধান মতে এ ১০ বছর সাজা দিতে পারেন বিজ্ঞ আদালত। আমরা সেখানে যাতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, এমন একটা ব্যবস্থা করতে চাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এ আইনে সাজা কমাতে চান, সে কমানো সাজা যাতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়। সে কমানো সাজার মধ্যেই যাতে তারা থাকেন, সেরকম একটা ব্যবস্থার চিন্তা-ভাবনা করছি এবং সেজন্যই আমি বললাম এটা পাস হওয়ার পরই আপনারা বুঝবেন এটার কি রূপ আমি দিচ্ছি।

বিজ্ঞ মানুষরা অন্যায় করলে তার বিচার হবে না?

নোবেলজয়ীরা ড. ইউনুসের পক্ষে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনুসের মামলার ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। তার কারণ হলো- এ মামলাটাও কিন্তু সাব-জুডিস (বিচারাধীন)। এ মামলার বিষয়ে যতদূর আমি জানি, লেবার কোর্টে ট্রায়াল হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ মামলাটা যে কারণে করা হয়েছে বা যারা বাদী তাদেরও তো মামলা করার অধিকার রয়েছে। মামলার জায়গায় আমি এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না। কিন্তু আমি একটা কথা বলব যেটা আমি আগে বলেছি, আবারও বলছি, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন, কোনো অন্যায় বা অপরাধ সাধারণ মানুষ করলে তার বিচার হবে। বিজ্ঞ মানুষরা অন্যায় করলে তাদের বিচার হবে না কেন? এ সংস্কৃতি সৃষ্টি করা যায় না।

এসএইচআর/এফকে