কলাবাগানে ‘নির্যাতনে’ গৃহকর্মীর মৃত্যু : গৃহকর্ত্রীর নামে মামলা
রাজধানীর কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসায় গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে অজ্ঞাত গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। রোববার রাতে কলাবাগান থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কলাবাগান থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে নিহত গৃহকর্মীর পরিচয় শনাক্তের সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু রোববার (২৭ আগস্ট) রাত পর্যন্ত তার পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় আমরা নিজেরা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, মামলার বাদী কলাবাগান থানার এসআই বাবুল হোসেন। আসামি করা হয়েছে গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীনকে (ডলি)। তিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। রাতেই একটা সুখবর আসতে পারে।
আরও পড়ুন : এখনও পরিচয় মেলেনি ‘নির্যাতনে নিহত’ গৃহকর্মীর, লাপাত্তা গৃহকর্ত্রী
উল্লেখ্য, কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নং ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ই-১ এ সাথী আক্তার পারভীন তার শিশু সন্তান আর ওই গৃহকর্মী নিয়ে বসবাস করতেন। গত তিন বছর ধরে নিহত গৃহকর্মী ওই বাসায় কাজ করছিল।
কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ওই বাসায় প্রায়ই শিশু গৃহকর্মীকে (১০) নির্যাতন করা হতো বলে ধারণা পুলিশের। গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালেও ওই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হয়। শিশুটি মারা যাওয়ার পর মোবাইলফোন রেখে পালিয়ে যান সাথী। খবর পেয়ে শনিবার সকালে ওই বাসা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, নিহতের শরীরে অনেক নতুন ও পুরাতন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখে ফেনা, শরীর ফোলা।
ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, অভিযুক্ত সাথী আক্তার পারভীন দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্বামীর নাম মামুন। তিনি পেশায় গাড়ি চালক। তার ঘরে কন্যা সন্তান রয়েছে। তার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একজন চিকিৎসকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তার সঙ্গেও ডিভোর্স হয় ২০২০ সালে। ওই স্বামীর পরিচয়েই তিনি ফ্ল্যাটটিতে ২০১৬ সাল থেকে থাকেন। ডিভোর্সের পর সাথীর স্বামী ঢাকা থেকে চলে যান এবং তিনি এখন যশোরে থাকেন। সাথীর চিকিৎসক স্বামীর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে জানতে পারি, ডিভোর্স হওয়ার পর থেকে তিনি আর এ বাসায় আসেন না। তার সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর ওই গৃহকর্মীকে বাসায় এনেছিলেন সাথী।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টা ৪ মিনিটে নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে হেঁটে বেরিয়ে যান সাথী আক্তার। এর ৫ মিনিট পর ৯টা ৯ মিনিটে আবারও ফিরে আসেন। পরবর্তীতে ৮ মিনিট পর আবার বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি আর ফেরেননি।
জেইউ/এসকেডি