সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ / ছবি - ঢাকা পোস্ট

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে বুধবার পাঁচ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন, তথ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের (এনবিআর) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা করার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের মতামত নেয় ইসি। নীতিমালা ‘যুগোপযোগী’ করার পাশাপাশি পর্যবেক্ষকদের নিজেদের যন্ত্রপাতি আনা ও কর অব্যাহতির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এতে ২১টি গাইডলাইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মানতে হবে এ গাইডলাইন। সবই পর্যবেক্ষকদের সহায়ক বলে জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

বুধবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অশোক কুমার বলেন, এ নিয়ে সামনে আরও বসা হবে। এরপর খসড়া অনুমোদন করবে কমিশন। যা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চূড়ান্ত হবে। 

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বুধবারের সভায় ভোট পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশিদের আবেদন সীমা, প্রয়োজনীয় কারিগরি সুযোগ-সুবিধা ও প্রাক নির্বাচনী একটি প্রতিনিধি দলের সুপারিশ পর্যালোচনা করে নীতিমালা হালনাগাদের বিষয় আলোচনা করা হয়। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রাক অনুসন্ধানী প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অক্টোবরে আসবে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ দল।

এদিকে, আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউর ‘যত খুশি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক’ পাঠানোকে স্বাগত জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসি বলছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো এলে সুবিধা হয়। কারণ, আরও কিছু ফরমালিটিজ রয়েছে। এখানে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সের বিষয় রয়েছে। নিরপেক্ষ অবজারভার পাঠালে, যত সংখ্যক ইচ্ছে পাঠাতে পারে। এতে কমিশনের কোনো আপত্তি নেই।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন জানান, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষককে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।

> ২০১৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। সেই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল তারা।

> একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এছাড়া, ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা, দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

> দশম সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় পর্যবেক্ষকও কম ছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ওই নির্বাচনে মাত্র ৪ জন বিদেশি এবং স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

> ২০০৮ সালে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি, ২০০১ সালে ২২৫ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি, ১৯৯৬ সালে প্রায় ৪০ হাজার দেশি এবং ২৬৫ জন বিদেশি, ১৯৯১ সালে ৩০ হাজার দেশি এবং ৫৯ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

এসআর/এফকে