রোববারই বইমেলার শেষ দিন!
এবারের অমর একুশে বইমেলা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হতে যাওয়া দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে মেলার ব্যাপ্তি কমানোর কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। তাই ১৪ এপ্রিল নয়, লকডাউনের আগের দিন রোববার (৪ এপ্রিল) ১৮তম দিনেই সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে এবারের প্রাণের বইমেলার।
যদিও এখন পর্যন্ত মেলা বন্ধের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানায়নি আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। কর্তৃপক্ষ বলছে, লকডাউনের সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর মেলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
বিজ্ঞাপন
বইমেলাসহ সব ধরনের জনসমাবেশ লকডাউনের আওতায় থাকবে বলে শনিবার (৩ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। মেলার সার্বিক বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বইমেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে রোববার (৪ এপ্রিল) জানানো হবে। তবে, মেলা বন্ধ থাকবে না-কি চালু থাকবে এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খোলা থাকবে যেসব প্রতিষ্ঠান
এদিকে শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার যথারীতি বিকাল ৩টায় শুরু হবে বইমেলা, চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত।
সূত্র জানায়, এবারের বইমেলার শেষ দিন হওয়ার কথা আগামী ১৪ এপ্রিল। কিন্তু এক সপ্তাহের লকডাউন শেষে মেলার বাকি থাকে চার দিন। পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউন আরও হতে পারে। ফলে রোববার (৪ এপ্রিল) বইমেলার শেষ দিন হতে পারে। কিন্তু শনিবার বিকাল পর্যন্ত মেলা নিয়ে বাংলা একাডেমি সরাসরি কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় বিপাকে প্রকাশকরা। কারণ ৪ এপ্রিল মেলার শেষদিন হলে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বইসহ স্টলের সরঞ্জামাদি নিয়ে কখন ঘরে ফিরবেন এ নিয়েও দুচিন্তায় রয়েছেন তারা।
এ নিয়ে শনিবার বিকেলে মেলাপ্রাঙ্গণের জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির অফিসে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রকাশকরা জানান, রোববারের মধ্যে বাংলা একাডেমি থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে মেলা শেষে রাতেই তারা বই নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।
জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার বিকেলেও আমরা বাংলা একাডেমি কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে দেখা করেছি। কিন্তু তিনি আমাদের কিছু জানাননি। তিনি বলেছেন, লকডাউনের বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পর মেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরপর মেলা প্রাঙ্গণে প্রকাশকরা বৈঠকে করেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করার।
আরও পড়ুন: কেনাকাটার হিড়িক, হাঁটারও জায়গা নেই
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক বলেন, ৪ এপ্রিল বাংলা একাডেমি মেলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না জানালে এইদিন মেলা শেষে রাতেই প্রকাশকরা জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন। কারণ এই ঝড়-বৃষ্টির দিনে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে বই রেখে যেতে চান না।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। অন্য দিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে। কিন্তু করোনা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ করোনা প্রতিরোধে ১৮টি নির্দেশনা দেয় সরকার। নির্দেশনায় সব ধরনের মেলা ও জনসমাবেশের বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়। এরপর বইমেলা বন্ধ হওয়া নিয়ে আলোচনা উঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার বইমেলা সময়সীমা কমিয়ে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত করা হয়।
এএইচআর/এসকেডি