কোনো প্রিজনারকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠায় কি না?

শর্ত সাপেক্ষে কারামুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমি জানি না কোনো দেশের প্রিজনারকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়া হয় কি না?

রোববার (২০ আগস্ট) ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য় আয়ো‌জিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া সুযোগ পাবেন কি না জানতে চাওয়া হলে প্রশ্ন করার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, আমি জানি না কোনো দেশের প্রিজনারকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়? এ ধরনের বিদেশে পাঠায় কি না, আমি জানি না। আপনি জানেন, কোনো দেশ পাঠায়? যদি কোনো দেশ পাঠায় থাকে আমাকে বলেন, বাট আই ডোন্ট নো।

বিএনপি চেয়ারপারসন দেশে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন ড. মোমেন।

দুর্নীতি মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া খালেদা জিয়া ২০২০ সালে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হলেও সাড়া মেলেনি।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দণ্ডিত খালেদা জিয়া যে শর্তে মুক্ত রয়েছেন, তাতে তার বিদেশ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

ভারতের শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের ট্রাভেল পাস আগামী মাসে শেষ হবে। বিএনপির এ নেতাকে দ্বিতীয় দফায় ট্রাভেল পাস দেওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভূমিকা বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন যে আইন আছে সে অনুযায়ী আমাদের যে অনুরোধ করবে, আমরা সেটাই রাখব। সেপ্টেম্বরে যে তারিখ পার হয়ে যাবে সেটা আমার জানা নেই।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন দণ্ডপ্রাপ্ত। তাহলে তাকে ওই চুক্তির আওতায় ফেরানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা একটা টাইম কনজিউমের বিষয়। আর তিনি স্বেচ্চায় আসতে চেয়েছেন। উনি যদি না আসে আমরা ভবিষ্যতে দেখব।  

গত ১২ জুন গোহাটির বাংলাদেশ মিশন থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। ট্রাভেল পাসের শর্তে বলা আছে, ট্রাভেল পাস ইস্যুর তিন মাসের মধ্যে তাকে দেশে ফিরতে হবে। 

২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন। ওই বছরের ১১ মে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করে শিলংয়ের পুলিশ। ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা থেকে সালাহউদ্দিনকে খালাস দেন ভারতের একটি আদালত। তবে আদালতের রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে থেমে যায় সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরা।

প্রায় সাত বছর বিচার চলার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। তিনি বেকসুর খালাস পান। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় সালাউদ্দিন দেশে ফিরতে পারছিলেন না। পরে ট্রাভেল পারমিটের জন্য গোহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন।

সালাউদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালে বিএনপির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। ২০০১ সালে কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সালাহউদ্দিন। তাকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। মেঘালয়ে যখন আটক হন তখন তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ভারতের জেলে থাকাকালে বিএনপি তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য করে।

এনআই/এসএম