দেশের নাগরিকদের পেনশনব্যবস্থার আওতায় আনতে বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) চালু করেছে সরকার; আর প্রথম দিনেই তাতে মিলেছে ব্যাপক সাড়া।

১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য কমপক্ষে ৬ হাজার ১০০ জন সাইন আপ করেছেন। তাদের মধ্যে ৪৬৩ জন তাদের প্রথম কিস্তির টাকা জমাও দিয়েছেন।

বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) বৃহস্পতিবার সকালে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পরপরই সবার জন্য সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন >> সর্বজনীন পেনশন : কত জমায় সর্বোচ্চ কত টাকা পাওয়া যাবে?

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম ঢাকাপোস্টকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বরণের মাসে জাতিকে সার্বজনীন পেনশন উপহার দেওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে আরও একধাপ অগ্রগতি সাধিত হলো।  প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট www.upension.gov.bd চালু করা হয়েছে এবং ৪ টি স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ও মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংকে টাকা প্রদান শুরু হয়েছে। সিস্টেম চালু হওয়ার পর থেকে দেশে এবং বিদেশের বাংলাদেশী নাগরিকদের নিকট থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জারি করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা অনুযায়ী, এ কর্মসূচিতে যুক্ত হলে ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন গ্রাহক। চাঁদা পরিশোধের পর তিনি মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন ১৫ বছর।

সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আপাতত চার ধরনের স্কিম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রবাসীদের জন্য প্রবাস স্কিম, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি স্কিম, অনানুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম আর নিম্নআয়ের মানুষের জন্য রয়েছে সমতা স্কিম। 

বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক মাসিক ৫ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার ও ১০ হাজার টাকা চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় দিয়ে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক মাসিক ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

আর সুরক্ষা স্কিমে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, ইত্যাদি শ্রেণির ব্যক্তি মাসিক ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

এবং সমতা স্কিমে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা (যাদের বর্তমান আয়সীমা বাৎসরিক অনূর্ধ্ব ৬০ হাজার টাকা) মাসিক ১ হাজার চাঁদা প্রদান করে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এক হাজার টাকার মধ্যে চাঁদাদাতা ৫০০ টাকা ও সরকারি অংশ ৫০০ টাকা হবে।

আরএম/এসএমডব্লিউ