বইমেলা চলবে কি না সিদ্ধান্ত বিকেলে
করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার। এ অবস্থায় চলমান অমর একুশে বইমেলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক ডেকেছে বাংলা একাডেমি। শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে বাংলা একাডেমিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সরকার এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে। তাই এ অবস্থায় বইমেলা চলবে নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে তার জন্য বিকেলে বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে প্রকাশক ও বাংলা একাডেমির প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। আশা করি, বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে মেলা নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।
বিজ্ঞাপন
করোনার কারণে ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে এ বছর ১৮ মার্চ মেলা শুরু হয়। সেদিন বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা। অন্যান্য দিনগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে। কিন্তু দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে ৩১ মার্চ বইমেলার সূচি পরিবর্তন করে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত করা হয়।
শনিবার (৩ এপ্রিল) সকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার।
তিনি বলেন, আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দ্রুত বেড়ে যাওয়া করোনা সংক্রমণ রোধ করতে সরকার ২-৩ দিনের মধ্যে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের চিন্তা করছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান জরুরি সেবা দেয় সেই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো লকডাউন চলাকালে খোলা থাকবে। এছাড়া শিল্প-কলকারখানাও খোলা থাকবে, যাতে করে শ্রমিকরা শিফটিংয়ের মাধ্যমে কাজ করতে পারে।
করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের পর্যটন কেন্দ্র। বাতিল করা হচ্ছে হোটেল-মোটেলে আগাম নেওয়া বুকিং। পাশাপাশি নতুন বুকিংও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সরকার থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। সবশেষ চলতি বছরের ২ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে নয় হাজার ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ছয় লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জন।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ পর্যন্ত (৩ এপ্রিল) ২৮ লাখ ৫১ হাজার ২৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে দশ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার ২৬৮ জন।
গত বছরের শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই জারি করা হয় লকডাউন। এতে থমকে যায় দেশগুলোর অর্থনীতির চাকা। বাংলাদেশেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে জেলা ভিত্তিক চলাচল সীমিত করা হয়। পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে বিভিন্ন দেশে শর্তসাপেক্ষে লকডাউন তুলে নেয়। এরই মধ্যে এ ভাইরাস প্রতিরোধে প্রতিষেধক টিকাও প্রয়োগ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে।
এএইচআর/এসএসএইচ